সিরিয়ায় আল-আসাদ সরকারের পতন এবং ইরানি প্রক্সিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ইরানি পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন ইসরাইলের এক সাবেক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
সাবেক আইডিএফ অপারেশন্স কমান্ড চিফ মেজর জেনারেল (রিজার্ভ) ইসরায়েল জিভ রোববার জেরুসালেম পোস্টকে বলেন, বাশার আল-আসাদের পতন, এবং সেইসাথে ‘এক্সিস অব রেসিস্ট্যান্স’ দুর্বল হয়ে পড়াটা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। আর ওয়াশিংটনের উচিত হবে, বিশেষ করে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে, তেহরানের আগের চেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ার সুযোগটি কাজে লাগানো।
তিনি বলেন, ইরানি প্রক্সিগুলো পাল্টা আঘাত হানতে পারে, এমন শঙ্কার কারণে যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইল কেউই ইরানের পরমাণু কর্মসূচিগুলোতে হামলা করতে প্রস্তুত ছিল না।
কিন্তু জিভ বলেন, এখন আমরা ইরানের বিরুদ্ধে কতটুকু চাপ সৃষ্টি করতে পারি, তা দেখা উচিত, যাতে তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচি আর জোরদার করতে বা আর অগ্রগতি করতে না পারে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া ইসরাইল তা করতে পারে না। তাদেরকে আমাদের দরকার।’ তিনি ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে আঘাত হানার ক্ষেত্রে ইসরাইলের বিমান শক্তির সীমাবদ্ধতার দিকে ইঙ্গিত করেন।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি পর্বতের ভেতর লুকানো ইরানি পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয ৩০ হাজার পাউন্ডের বোমা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে। কিন্তু ইসরাইলের কাছে এ ধরনের কোনো অস্ত্র নেই। তাছাড়া এসব অস্ত্র পরিবহন করার মতো বিমানও ইসরাইলের কাছে নেই।
তিনি বলেন, তাছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে বিশাল এলাকায় হামলা চালানোর জন্য আরো বড় বিমানশক্তির দরকার।
জিভ বলেন, আল-আসাদের পতনের ফলে ইরাক ও সিরিয়া এমনকি লেবাননে ইরানের প্রক্সিগুলোর শক্তি শেষ হয়ে গেছে। এমনকি দক্ষিণ ইয়েমেনেও ইরানি প্রক্সিগুলোর শক্তি শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আসাদের পতন মানে ‘এক্সিস অব রেসিস্ট্যান্সের’ অবসান। হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়ায় লেবাননের পরিস্থিতিও বদলে গেছে। ফলে ইরান আরো নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে।
সিরিয়ার নতুন শাসকদের কাছ থেকে হুমকির ব্যাপারে জেনারেল জিভ বলেন, ইসরাইল সুযোগ নিতে পারে না। জিহাদিরা ইসরাইলকৈ পছন্দ করে না। সীমান্তকে স্থিতিশীল করার জন্য নতুন সিরিয়ার সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার কৌশল গ্রহণ করতে পারে ইসরাইল।
তিনি বলেন, ইসরাইলকে সিরিয়ার কিছু এলাকা নিয়ে অবশ্যই একটি স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠনের কাজে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায় করতে হবে। এই কুর্দি গ্রুপটি সুস্পষ্টভাবে ইসরাইলের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক রক্ষায় আগ্রহী।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট