সোমবার (৯ই ডিসে:) সকালের দিকে কুষ্টিয়া শহরে ব্যস্ততম কোর্টস্টেশন রেলগেট এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে চড়থাপ্পড় ও জুতা দিয়ে পেটান দুই নারী। মারধর ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে থানায় মামলা দায়ের পরবর্তী সোমবার (৯ই ডিসে:) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার দুই নারী হলেন—শহরের থানাপাড়ার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী সোহানা ইসলাম (৪৪) ও হাউসিং বি ব্লকের বাসিন্দা রিপন হোসেনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার শান্তা (৩৯)।
সূত্র জানায়, বিকেলে ওই পুলিশ সদস্য বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। এজাহারে ওই দুই নারীর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে পরিচয় শনাক্ত করার পর তাদের আটক করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই ট্রাফিক পুলিশ কোর্টস্টেশন মোড় এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় সড়কের বিপরীত দিক থেকে মধ্যবয়সী এক নারী হেঁটে তীব্র গতিতে ট্রাফিক পুলিশের দিকে যাচ্ছেন। ওই নারী ট্রাফিক পুলিশের সামনে গিয়েই ডান হাত দিয়ে সজোরে থাপ্পড় দেন, আঙুল নাড়িয়ে কিছু বলতে থাকেন। এরপর পায়ের জুতা খুলে মারতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর আরেক নারী এসে জুতা দিয়ে মারতে থাকেন। তখন প্রথম নারী মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিওধারণ করতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশকে মারধরের সময় ওই নারী মুখে কোনো কথা বলেননি। ফলে বোঝা যায়নি ঠিক কী কারণে মারধর করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, ‘একজন মুরব্বি (বয়োজ্যেষ্ঠ) ট্রাফিক সদস্য ডিউটি করছিলেন। ট্রেন চলে আসায় লেভেল ক্রসিংয়ের বার নামিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় একজন নারী রেলপথ পার হওয়ার চেষ্টা করলে ওই ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বাধা দেন। প্রথমে ওই নারী অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরে আরেক নারীকে সঙ্গে নিয়ে এসে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন।’
শান্তার স্বামী রিপন জানান, সন্ধ্যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা প্রথমে তাকে দোকান থেকে তুলে নেন। পরে বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেন।