আগামী (২০২৫ সালে) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে যে জটিলতা চলছে, সেটার সমাধান এখনও হলো না। বরং সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিল। প্রস্তাবিত ‘হাইব্রিড’ মডেলে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের ব্যাপারে দুবাইয়ে চলমান আইসিসি সভায় কোনো সমঝোতায় আসা গেল না।
বুধবার সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘হাইব্রিড’ মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বাগতিক দেশ পাকিস্তানের বাইরে ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজনের ব্যাপারে কোনো মতানৈক্যে পৌঁছানো যায়নি। তাই ঝুলেই থাকল আট বছর পর হতে যাওয়া প্রতিযোগিতাটির ভবিষ্যৎ। সূচি অনুসারে, আট দল নিয়ে আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসর।
গত মাসে আইসিসিকে ভারত ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানে দল পাঠাবে না তারা। কারণ হিসেবে তারা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক বৈরিতার কথা উল্লেখ করে। সমস্যা সমাধানে আলোচনায় চলে আসে ‘হাইব্রিড’ মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের বিষয়টি।
প্রস্তাবিত পদ্ধতি অনুসারে, গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচ হবে পাকিস্তানে। তবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার হাইভোল্টেজ লড়াই দুবাইতে গড়াবে। ভারত ফাইনালে উঠলে সেখানেই হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। তা না হলে ফাইনালের ভেন্যু থাকবে লাহোর।
এএফপিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ‘হাইব্রিড’ মডেলে সম্মত হয়েছে। কিন্তু একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে তারা। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ভারতে যেসব আইসিসি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে, সেগুলোতেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজন করতে হবে ভারতের বাইরে। এই শর্তে আবার বাধ সেধেছে বিসিসিআই। শুধু তাই নয়, নিজেরা না উঠলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল লাহোরে হওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে ভারত।
ভারত ও পাকিস্তান শেষবার দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে। সেবার ভারত সফরে গিয়ে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিল পাকিস্তান। আর পাকিস্তানে শেষবার ভারত ভ্রমণ করেছিল আরও আগে, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে। গত এক দশক ধরে কেবল আইসিসি আয়োজিত প্রতিযোগিতাতেই পরস্পরকে মোকাবিলা করছে দুই দল।
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি এখন অবস্থান করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে। সেখানে অবস্থিত আইসিসির কার্যালয়ে চলছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সভা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে থাকতে হচ্ছে অপেক্ষায়।
১৯৯৬ সালের পর পাকিস্তানের মাটিতে আর হয়নি কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট। সেবার ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ছিল তারা। মাঝে ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার কারণে বেশ কয়েক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধও ছিল পাকিস্তানে। দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষে ২০২৫ সালে দেশটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসার কথা থাকলেও জটিলতা কাটছে না।