যশোরের শার্শা উপজেলায় এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মশিউর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবেই তাঁকে বদলি করা হয়েছে।
তিন আসামি কামরুল ইসলাম, ওমর আলী ও আবদুল লতিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে যশোর আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুদ্দিন হুসাইন তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুরের পর আসামিদের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।
ঘটনার পাঁচ দিন পর গতকাল সন্ধ্যায় শার্শা থানার ওসিকে বদলি করে যশোর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। ওসির বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে ওসি মশিউর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওই থানায় তাঁর দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। এমনিতেই তাঁর বদলির সময় হয়েছে। তাঁর বদলির সঙ্গে শার্শার ধর্ষণ মামলার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য ৫ সেপ্টেম্বর পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিবিআই যশোরের পরিদর্শক শেখ মোনায়েম হোসেনকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মোনায়েম হোসেন জানান, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাদের আমাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষণের শিকার ওই নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। এরই মধ্যে ওই নমুনা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের আদেশের পর আসামিদের ঢাকায় নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।’
প্রধান অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল আলমের ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ মোনায়েম হোসেন বলেন, এটি তদন্তের বিষয়। তদন্তে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দীন শিকদারকে প্রধান করে যশোর পুলিশ প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা জমা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার প্রথম আলোকে বলেন, যথাযথ তদন্তের জন্য কমিটির পক্ষ থেকে আরও সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যথাযথ তদন্তের স্বার্থে সময় বাড়ানো হবে।
২ সেপ্টেম্বর যশোরের শার্শা উপজেলায় পুলিশের এসআই খায়রুল আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরদিন এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। মামলা হওয়ার পর কামরুল ইসলাম, ওমর আলী ও আবদুল লতিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।