“বরিশালের উজিরপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পালের বিরুদ্ধে এক সাবেক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী অভিযোগ করেছেন, মেয়েকে অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ায় তিনি বরিশাল রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কাছে অভিযোগ করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি মারধর করেছেন।”
এ ঘটনায় বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাইমুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মারধরের শিকার রাশিদা বেগম (৬২) প্রয়াত এএসআই মঈন উদ্দিন মাতবরের স্ত্রী। রাশিদা বেগম উজিরপুরের ইচলাদী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ইচলাদী গ্রামে ভাড়াবাড়িতে থাকেন।
রাশিদা বেগম জানান, গত ১৩ আগস্ট স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বাসায় রেখে তিনি বরিশাল যান। তখন ইচলাদী গ্রামের পাঁচ-ছয়জন বখাটে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ১৪ আগস্ট তিনি বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু ওসি শিশির কুমার পাল অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেননি। ১৯ আগস্ট মেয়েকে উদ্ধার করে তাঁর হাতে দেন ওসি। মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসার পথে বখাটেরা ফের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই রাতে থানায় এসে পুনরায় অপহরণের কথা ওসিকে জানান। তখন নতুন করে অভিযোগ দিতে বলেন। কিন্তু ওসি তিনবার অভিযোগ নেন এবং ছিঁড়ে ফেলেন। দুই-তিন দিন আগে তিনি বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি সফিকুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।
রাশিদা বেগম বলেন, ‘ডিআইজি স্যারের কাছে নালিশ দেওয়ার পর গত বুধবার সন্ধ্যায় আমাকে থানায় ডেকে পাঠান ওসি শিশির কুমার পাল। সন্ধ্যায় থানায় গেলে আমাকে চায়ের দোকানে গিয়ে বসতে বলেন। বাচ্চু মিয়ার চায়ের দোকানে গিয়ে বসেছিলাম। তখন থানার কনস্টেবল জাহিদুল আমাকে মারধর করে এবং গালে সিগারেটের আগুন চেপে ধরে। চায়ের দোকানে উপস্থিত লোকজন আমাকে রক্ষা করেন। পরে ওসির কাছে বিচার দিতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালি দেন। আমার দুই গালে থাপ্পড় দিতে দিতে ওসি তাঁর কক্ষ থেকে বের করে দেন।’
এ অভিযোগের ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না। ওসি শিশির কুমার পাল বলেন, ‘ওই মহিলা (রাশিদা বেগম) মামলাবাজ। তাঁর মেয়ে অপহরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এদিকে রাশিদা বেগমকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ সম্পর্কে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।