চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাসের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রবিবার বিকাল ৫টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মোমিনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের জন্য রবিবার বিকেলে স্থানীয় একটি ক্লাব মাঠে সম্মেলন আহ্বান করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস ও পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু সমর্থক নেতাকর্মীরা। কয়েক দিন ধরেই এ সম্মেলন সফল করতে প্রচারণাও চালানো হয়।
কিন্তু রবিবার সকালে একই স্থানে হঠাৎ করে জনসভা আহ্বান করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সমর্থকরা। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ দুপুরের আগে ওই মাঠে সব ধরনের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু এরপরও দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
এ খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। তিনি দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। পরে আশাদুল হক বিশ্বাস-জিপু চৌধুরীর সমর্থকরা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারের বাসভবনের পাশে সম্মেলনের অনুমতি পান।
সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের অনুসারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান নান্নু ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী শেফালী খাতুন পক্ষের নেতাকর্মীরা মোমিনপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের ওপর জনসভার মৌখিক অনুমতি পান। বিকেল সাড়ে ৩টার পরই দুইপক্ষ তাদের কর্মসূচি পালন শুরু করে।
আশাদুল হক বিশ্বাসের পক্ষের নেতাকর্মীরা দাবী করেন, সম্মেলনে যোগ দিতে বিকেল ৫টার দিকে আশাদুল হক বিশ্বাসের গাড়িবহর মোমিনপুর রেলক্রসিংয়ের কাছে পৌঁছালে প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ করে গাড়িবহর আটকে দেয়। এরপরই গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশি বেষ্টনির মধ্যে দুই পক্ষ তাদের কর্মসূচি পালন করে।
জেলা কৃষক লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার অভিযোগ করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ সম্মেলন বানচাল করতেই প্রধান অতিথি আশাদুল হক বিশ্বাসের গাড়িবহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবদুল মান্নান নান্নু।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ জানান, দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোমিনপুর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।