আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো শত্রুতা নেই। দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি খালেদা জিয়া জামিন পেলে যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, সে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেছেন, জামিন পেলে চিকিৎসকরা যদি খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দেন, তখনই সরকার বিষয়টি দেখবে।
বুধবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুর কাদের এই মন্তব্য করেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন। ৭৪ বছর বয়সী খালেদাকে চিকিৎসার জন্য গত ১ এপ্রিল থেকে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে তার দলের নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে আসেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জামিন পেলে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন।
সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালত মিলে খালেদার বিরুদ্ধে এখন ১৭টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে দুটি মামলায় (জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) জামিন পেলেই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন বলে তার আইনজীবীদের ভাষ্য।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে সরকার কোনো উদ্যেগ নেবে কিনা।
উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যে সংসদ সদস্য এ কথা বলেছেন, তিনি আমার সাথে দেখা করেও এ কথা বলেছেন কয়েকদিন আগে… বেগম জিয়াকে ঘিরে তাদের অভিপ্রায়ের কথা, জামিন পেলে তিনি বিদেশে যাবেন।”
হারুনুর রশীদ এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে অনুরোধ করেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেটা আমি জানিয়েছি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি জামিন পাবেন কিনা সেটা আদালতের বিষয়। সরকার আদালতকে কীভাবে বলবে যে জামিন দিয়ে দেবেন? এটা কি বলা উচিত? তাহলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সরকারের হস্তক্ষেপ হবে।
“উনি যদি জামিন পান এবং চিকিৎসকরা যদি মনে করেন তার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করা দরকার, সেটা তারা বলতে পারেন। সে ধরনের কোনো রিপোর্ট পেলে, চিকিৎসকদের পরামর্শ থাকলে জানাতে পারেন। আদালতে জামিন দেওয়ার বিষয়ে সরকার বলতে পারে না। এটি আদালতের উপর ছেড়ে দিন।”
সরকার খালেদাকে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বেগম জিয়ার সাথে আমাদের তো কোনো শত্রুতা নেই, তিনি যদি জামিন পান, জামিন পেলে চিকিৎসকরা বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে রিপোর্ট দেন তখন দেখা যাবে।”
জামিনের বাইরে বিকল্প ব্যবস্থায় খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- এ প্রশ্নে কাদের বলেন, “সংসদ সদস্য হারুন শুধু জামিনের কথা বলেছেন, নেত্রীকে জানাতে বলেছেন। সে তো আন্তরিকভাবে বলেছে, বেগম জিয়ারও ইচ্ছা থাকতে পারে। বেগম জিয়ার সাথে আলোচনা করেই আমার সাথে আলোচনা করেছে।
বিএনপির যে নেতারা আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার কথা বলছেন, তাদের সমালোচনাও করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আন্দোলনের ছোট ঢেউও তো দেখছি না। আন্দোলন করে বের করুক…. তারা যখন এত বড় দল।”
“আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী আদালতের বিষয় বলেছেন। আদালদের জামিন বিষয়টা মূল। বলেছেন, আদালতে জামিন না হলে কীভাবে দেখব?” বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ নিজেও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান কাদের।