fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অপরাধতাকে ক্যাসিনোর সম্রাট বানানো গডফাদার ও সুবিধাভোগী কারা

তাকে ক্যাসিনোর সম্রাট বানানো গডফাদার ও সুবিধাভোগী কারা

যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট নিজেই জানিয়ে দিচ্ছেন তার গডফাদার এবং তার কাছ থেকে সুবিধাভোগীদের নাম। কিভাবে সে সম্রাট থেকে হয়েছে ক্যাসিনোর সম্রাট। চাঁদাবাজি থেকে টেন্ডারবাজি এবং ক্যাসিনোর মতো সব কিছু নিয়ন্ত্রণে কিভাবে নিয়েছেন তিনি সে সব কাহিনী ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে। মিলছে প্রশ্নের উত্তর কাদের প্রশ্রয়ে ছিল? গডফাদার হতে কারা তাকে সহযোগিতা করেছে? কারা কারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে? সেইসব গডফাদার এবং সুবিধাবাদীরা কে কোথায় সবই।

সম্রাটের দেওয়া স্বীকারোক্তির ওইসব নামের তালিকা ধরে পর্যবেক্ষণে মাঠে নামবে র‌্যাব, পুলিশসহ গোয়েন্দারা। অনুসন্ধানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)। দুদক ইতোমধ্যে ক্যাসিনো সংশ্লিষ্ট ২০ জনের বিষয়ে অনুসন্ধানও শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

রবিবার (৬ অক্টোবর) ভোরে গ্রেপ্তার হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। এরপরই তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাকে নিয়ে তারই কার্যালয় কাকরাইলে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানের মধ্যেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ডও দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

সোমবার ( ৭ অক্টোবর) তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মামলা দুটিতে পুলিশ ও র‌্যাব উভয় সংস্থাই তাকে রিমান্ডে নেবে। রিমান্ডে বেরিয়ে আসবে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। অবশ্য এর আগেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে নিজের প্রশ্রয়দাতা ও সুবিধাভোগীদের অনেকেরই নাম বলে দিয়েছেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, সম্রাট যাদের নাম বলেছেন, তদন্তে তারা দোষী প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

সূত্র জানায়, কাকরাইলের ভ‚ইয়া ম্যানশনের কার্যালয়টিতে সম্রাটের মতোই জীবনযাপন ছিল ইসমাইল হোসেন সম্রাটের। আটকের পর হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় অপরাধীর বেশে চিরচেনা কার্যালয়ে যাওয়ার ঘটনায় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। সবসময় যাদের পাশে ছিলেন দুঃসময়ে তাদের পাশে না পেয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্ষোভ থেকে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তার আন্ডারওয়ার্ল্ড গুরু এবং কয়েকজন শিষ্যের নাম বলে দিয়েছেন। উঠে এসেছে পুরনোসহ নতুন অনেকের নাম। প্রশ্রয়দাতা ও সুবিধাভোগীর তালিকায় ফেলেছেন সংগঠনের চেয়ারম্যানকেও।

সূত্র জানায়, কাকরাইলের অভিযানে সম্রাটের লকার থেকে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ক্যাসিনো আয়ের বড় অংশ যুবলীগ কর্মী ও জুয়া খেলার পেছনেই ব্যয় করতেন তিনি। অভিযানের আগে এ লকারে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা ছিল জানালেও অভিযানের দিন তা পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহিষ্কৃত দক্ষিণ যুবলীগ সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমান তার ক্যাশিয়ার ছিলেন। তার কাছেই সম্রাটের টাকা গচ্ছিত থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এর মধ্যে মাদক মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকেও আসামি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টার দিকে র‌্যাব-১ এর ডিএডি আবদুল খালেক বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলা দুটি করেন। এ সময় মামলার স্বপক্ষে আলামতও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রমনা থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলা দুটি নথিভুক্ত হওয়ার পর আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।

র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্রাটের অবৈধ অর্থের উৎস কোথায়, ক্যাসিনোর টাকা কোথাও না কোথাও একত্রিত হতো! তা কোথায় যেতো, দেশের বাইরের অর্থপাচার হতো কিনা তা খোঁজা হবে। আমরা খুব অল্প সময় সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাকে পুরোপুরি জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পেলে এসব জানার চেষ্টা করব। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় রিমান্ড চাইব।

সম্রাটের প্রশ্রয়দাতাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পেছনে মূল হোতা বা গডফাদারদের খোঁজা হচ্ছে। যেই হোক না কেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments