জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গতকাল মঙ্গলবার সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে উপাচার্যের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের দাবিতে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আয়োজিত মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে যিনি মনেপ্রাণে ধারণ করেন না তিনি কেন এই প্রতিষ্ঠানে উপাচার্য (ভিসি) পদে বহাল থাকবেন? আমরা তাঁকে উপাচার্য হিসেবে চাই না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার পরও তিনি যদি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দাবি করেন, তাহলে তিনি সেখানেই চলে যান।’
এই মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি তুলে ধরে বলা হয়, উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় প্রতিপন্ন করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আগামী রবিবারের মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁকে এই বক্তব্যের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হবেন।
গত বৃহস্পতিবার বেসরকারি একটি টেলিভিশনে টক শোতে জবি উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, যুবলীগের দায়িত্ব পেলে তিনি উপাচার্য পদ ছেড়ে দেবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেও তিনি এখনো যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর ১ নম্বর সদস্য। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিলে তিনি উপাচার্য পদ ছেড়ে দিয়ে যুবলীগের দায়িত্ব নেবেন।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। এই আইনের ৪৪ নম্বর ধারার ৪ নম্বর উপধারায় উল্লেখ রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না।
উপাচার্য এই আইনের বিষয়ে বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নন। এ সময় তিনি নিজেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগকর্তা বলে দাবি করেন। উপাচার্যের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল এই মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে দৈনিক সচেতন বার্তার বিশ্ববিদ্যালয়(জবি) প্রতিনিধি, উপাচার্যের দপ্তরে গেলে তিনি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য, প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি। উপরন্তু, সাংবাদিকরা কেন এই অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করতে এসেছেন তার কারণ জানতে চান তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা মানববন্ধন করছে তারা সাধারণ শিক্ষার্থী নয়।’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।