যশোরের বেনাপোলে সন্ত্রাসী হামলায় স্থলবন্দরের আট শ্রমিক মারাত্মক আহত হয়েছে। সোমবার সকালের দিকে বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের সামনে খোলা মাঠে ভারতীয় ট্রাক থেকে পাথর আনলোডের সময় শ্রমিকদের ওপর বোমা হামলা চালায় এক দল স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।
এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয় বেনাপোল বন্দর হ্যান্ডলিংক শ্রমিক ইউনিয়ন সদস্য কালাম, দুল্লী, শরিফুল, শামীম, সম্রাট, জুয়েল, কামাল ও রাজু। তারা সবাই বন্দর শ্রমিকদের গ্রুপ সরদার বলে জানান শ্রমিকরা।
আহত শ্রমিক দুল্লী জানান, তিনি ও তার গ্রুপের শ্রমিকরা সবাই মিলে বেনাপোল বাইপাস রোডে পাথর লোড-আনলোডের কাজ করতে যান। এ সময় একদল সন্ত্রাসী প্রাইভেটকার আমাদের গায়ে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে কারের মধ্যে থাকা সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা, বোমা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তিনিসহ তার দলের সাত শ্রমিক আহত হন।
এ সময় আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় স্থানীয় জনগণ। শ্রমিক নেতারা বিষয়টি জানতে ঘটনাস্থলে গেলে তাদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। প্রভাব বিস্তার করতে একটি পক্ষ বেনাপোল বাজার ও তালশারি মোড়ে তিনটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
বোমার আওয়াজে এলাকার জনসাধারণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, দোকানদাররা তাদের দোকান বন্ধ করে দেন ও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে দ্রুত স্কুল ত্যাগ করেন। সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।
এই হামলার প্রতিবাদে বেনাপোল বন্দরের শত শত শ্রমিক লাঠিসোটা নিয়ে যশোর-কলকাতা সড়কের বন্দরের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তালশারির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। পরে বন্দরের সামনে এসে হামলাকারীদের আটকের দাবিতে বন্দরের লোড-আনলোড বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শ্রমিকরা। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তিন ঘণ্টা পর বন্দরের কাজে যোগ দেয়।
এ বিষয়ে বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এনামুল হক মুকুল বলেন, শান্ত বেনাপোলকে অশান্ত করতে একদল সন্ত্রাসী উঠে পড়ে লেগেছে। তারা খেটে খাওয়া সাধারণ বন্দর শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে। এজন্য বন্দর শ্রমিকরা বন্দর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিল। জাতীয় স্বার্থে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে হামলাকারীদের আটকের আশ্বাস দিলে তারা দ্রুত সময়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার ও বন্দরের সকল কার্যক্রম সচল করেন বলে তিনি জানান।