পটুয়াখালীর বাউফলে (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) জেএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটকে রেখে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ২ নভেম্বর থেকে সারাদেশে জেএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। বাউফল উপজেলার মোট ৯টি কেন্দ্রে ৪৬৭৫ জন পরীক্ষায় অংশ নেবে।
মোট ৬১টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সমুদয় অর্থ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রায় সকল বিদ্যালয়ে প্রবেশপত্র আটকে রেখে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রবেশপত্র বিতরণের জন্য দুইজন সহকারি শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে প্রবেশপত্র দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
অবশ্য নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম নাসির উদ্দিন খান বলেন, আমরা প্রবেশপত্র বাবদ ১৫০ টাকা হারে আদায় করছি। প্রবেশপত্র বিতরণের ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা নেয়ার জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি ‘হ্যা’ বলেন।
গাজিমাঝি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক পরীক্ষার্থী বলেন, আমাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা হারে আদায় করা হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন প্রবেশপত্র বিতরণের ক্ষেত্রে টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বকেয়া টাকা পাওনা আছি। এখন সেই টাকা আদায় করছি।
মধ্য মদনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নুরাইনপুর অগ্রণী বিদ্যাপীঠ ও মদনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রবেশপত্র আটকে রেখে টাকা আদায় করা হচ্ছে ।
মদনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের খরচ সামাল দেয়ার জন্যই আমরা প্রবেশপত্র বিতরণের সময় টাকা আদায় করছি।
বাউফল উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহবায়ক ও ছিটকা মহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম নিশু বলেন, আমার বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু হয়নি। তবে প্রবেশপত্র বিতরণের সময় টাকা নেয়ার নিয়ম আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই সারাবছর বেতন দেয় না। তাই প্রবেশপত্র বিতরণের সময় আমরা বকেয়া টাকা আদায় করি।
বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রবেশপত্র আটকে রেখে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার কোন সুযোগ নেই। এভাবে টাকা নেয়া হলে অবশ্যই তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।