শনিবার রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের পর পানিতে ফেলে দিল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অকৃতকার্য এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না দেওয়ায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখা ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা এ ঘটনা ঘটায়।
ঘটনার মূল আসামি সপ্তম পর্বের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন সৌরভ। সৌরভ রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান গ্রুপের নেতা।
শনিবার দুপুর একটা ৩৫ মিনিটের দিকে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করে ক্যাম্পাসের ভিতরেই পুকুরের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারী গিয়ে অধ্যক্ষকে পুকুর থেকে টেনে তোলেন। তবে পুকুরের পানিতে ভিজে তার মোবাইল ফোনটিও নষ্ট হয়ে যায়।
অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। তাদের এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সৌরভের তিন বিষয়ে রেফার্ড (অকৃতকার্য) আছে। এরপরেও সে আবারও পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সকালে দলবল নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। কিন্তু তাকে জানানো হয়, এ বিষয়ে ডিপার্টমেন্টের কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। এতে সৌরভ ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায় এবং আমাকে হুমকি দেয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অধ্যক্ষের সঙ্গে প্রথমে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হন সৌরভসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা হঠাৎ করে অধ্যক্ষের উপর চড়াও হন এবং তাকে লাঞ্ছিত করেন। এরপর তারা অধ্যক্ষকে পুকুরের পানির মধ্যে ফেলে দেন।
ওই শিক্ষার্থীরা আরও জানান, অধ্যক্ষ তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে পুকুরপাড় দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় সৌরভরা তার গতিরোধ করে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। এরপর তাকে লাঞ্ছিত করে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমি ভিডিও ফুটেজে দেখেছি। তবে একমাত্র সৌরভকে চিনতে পেরেছি। অন্যদের চিনতে পারিনি। এর সঙ্গে জড়িততের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তার আগেই সবাই পালিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিকাল পর্যন্ত অধ্যক্ষ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ না করলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।