বাংলাদেশি নাগরিকের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতে ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে গেছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক মোশারফ হোসেন। এমন সময় এই ঘটনা ঘটে। এই খবর কলকাতার খ্যাতনামা পত্রিকা আনন্দবাজারে দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্ত তালতলা থানা পুলিশের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত। তার নাম বিশ্বনাথ বিশ্বাস।
উক্ত ঘটনায়, ভুক্তভোগী গাইবান্ধার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন (৪৮)। তিনি কোলন ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন । পরে তিনি আবার কলকাতায় ফিরে আসেন। কলকাতায় ফিরে গত ২০ নভেম্বর রাতে মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে ওঠেন। এর পরের দিন তার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার পরিকল্পনা ছিল।
মোশারফের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন তিনি ও তার আত্মীয় গোলাম সাকলাইন ট্যাক্সিতে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন। তিনি মৌলালি মোড়ের কাছে পৌঁছালে এক পুলিশ সদস্য তাদের ট্যাক্সি দাঁড় করান ও পরিচয় জানতে চান। বাংলাদেশি নাগরিক শুনেই ওই পুলিশ সদস্য তাদের পাসপোর্ট ও সঙ্গে থাকা ২৭ হাজার টাকা কেড়ে নেন। এমন সময়, প্রতিবাদকরতে গেলে তিনি মোশারফ ও সাকলাইনকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখান, এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেন।
পরবর্তীতে, অনেক অনুনয়-বিনয় করলে ওই পুলিশ সাত হাজার টাকা ফেরত দেয়। আর বাকি ২০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যান।
ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে কোনো অভিযোগ করেননি মোশারফ। তবে পরে ১৬ ডিসেম্বর কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা ও যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাকে ইমেইল করে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
এ ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে ভারতীয় প্রশাসন। এবং ততপরতার সাথে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্তের পর পরীক্ষা করা হয় ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। তারপর ঘটনার দিন মৌলালি মোড়ে ডিউটিতে কোন কোন পুলিশ সদস্য ছিলেন তার তালিকা বের করা হয়। সেখান থেকেই চিহ্নিত করা হয় পুলিশের গাড়িচালক বিশ্বনাথকে।
খবর থেকে জানা যায় যে, ভারতীয় পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৬ ধারায় বিশ্বনাথ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা করেছে। শুক্রবারই আটককে আদালতে তোলা হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এ ঘটনার আর কেউ জড়িত আছেন কি-না।