বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি সফররত চীনের বিশেষজ্ঞ দল বলেছেন, করোনার মতো ছোঁয়াচে ভাইরাসের বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। খুবই কম নমুনা পরীক্ষাও। তবে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা অনেক কম সত্ত্বেও তারা অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন।
রোববার (২১ জুন) চীনের বিশেষজ্ঞরা ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সঙ্গে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ কথা বলেন। সফর শেষ করে আগামীকাল দেশে ফিরে যাবে বিশেষজ্ঞ দলটি।
গত ৮ জুন চিকিৎসায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটি ঢাকায় আসে। ডা. লি ওয়েনশিউর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলে চিকিৎসক, নার্সসহ সংক্রামক ব্যাধি নিরোধ বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনাভাইরাসের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। চিকিৎসকসহ চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যাও খুবই কম। তবু স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে তারা অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন।
করোনা আক্রান্ত শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ জানিয়ে বিশেষজ্ঞ দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এখনো বাংলাদেশে করোনা টেস্টের পরিমাণ খুবই কম। দেশের সকল বিভাগে ল্যাবরেটরিও নেই। সেজন্য অনেককে তাদের টেস্টের জন্য ঢাকায় নমুনা পাঠাতে হয়।
বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার ওপর জোর দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দ্রুত পরীক্ষা, দ্রুত শনাক্তকরণ, দ্রুত আইসোলেশন এবং দ্রুত চিকিৎসা এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সন্দেহজনক কেস থেকে সর্বস্তরে টেস্ট নিশ্চিত করতে হবে।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে চীন লকডাউন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করে সুফল পেয়েছে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে পুষ্টিকর খাবারও দিতে হবে। সেভাবে তাদের শরীর গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণের পিক টাইম (চূড়ান্ত পর্যায়) পার করছে কি-না জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমাদের মনে হয় না পিক টাইম এখনো এসেছে। এটা বলা কঠিন। এ ভাইরাস কতদিন থাকতে পারে সেটাই কেবল বিজ্ঞানীরা বলতে পারেন।
বাংলাদেশ সফরকালে চীনের প্রতিনিধি দলটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পরিদর্শন করে এবং মনোনীত হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে কাজ করে। তারা করোনাভাইরাস মহামারি নিয়েও আলোচনা করে এবং করোনা নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার জন্য নির্দেশনা এবং প্রযুক্তিগত পরামর্শও দেয় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের।