গতকাল শুক্রবার ২৬ শে জুন সন্ধ্য সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর মিরপুর অঞ্চলে সরেজমিনে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন সচেতনতা নেই। মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে সাধারণ মানুষ। নেই সামাজিক দূূরত্ব মেনে চলার কোন বালাই। রাস্তার পাশে চায়ের দোকানের সামনে চলছে যুবকদের আড্ডা। স্বাভাবিক সময়ের মতই সব দোকান পাট খোলা, রাস্তার দু-পাশেই পন্যের পসার সাজিয়ে বসেছে ভ্রাম্যমান দোকানীরাও।
সরকারের কোন স্ংস্থা কিংবা সিটি কর্পোরেশান এর পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করার কোন উদ্যোগও নেই অঞ্চলে।
ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই অঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরো বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কায় শঙ্কিত অনেকেই।
স্বপন হোসেন নামে একজন দোকানী এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে এভাবেই চলে বাজার। ক্রেতারাও নির্বিঘ্নেই করে কেনাকাটা। অনেকেই মাস্ক ছাড়াই আসেন দোকানে বাজার নিতে। আশপাশের চায়ের দোকান গুলোর সামনেও চলে যুবকদের আড্ডা। এখন এলাকায় মসজিদের মাইকে প্রায় প্রতিদিনই দুই জন তিন জন করে মানুষের মৃত্যুর খবর ঘোষনা হয়।
তিনি আরো জানান, দিন পনেরো আগেও এলাকায় সিটি কর্পোরেশান এর লোকজন এসে বাঁশি বাজিয়ে মানুষ জনকে সরিয়ে দিতো। নিয়মিত পুলিশের টহল থাকতো। পুলিশ ভ্রাম্যমান দোকান গুলো বসতে দিতো না। সে সময় করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের ভেতরে একটা ভয় কাজ করতো। কিন্তু এখন এই সব তদারকি না থাকায় সাধারণ মানুষজনের চলাফেরা দেখে মনেই হয়না আমরা কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে জীবন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি।
উল্লেখ্য, আইইডিসিআর এর তথ্যানুযায়ী, গত ৪ই এপ্রিল রাজধানীর মিরপুর অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মণিপুরে ৫জন, সেনপাড়ায় ২ জন, মিরপুর ১০ ও ১১ নম্বর এলাকায় একজন করে রোগী আছে বলে জানানো হয়।
১৩ জুন ঢাকা সিটি করপোরেশনের করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভায় ৪৫টি এলাকাকে রেড জোনে চিহ্নিত করা হয়। ওই দিন জানানো হয় রাজধানী ঢাকায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। যার সংখ্যা হচ্ছে ৯১৮ জন।
রেড জোনের ঘোষণা আসার আগেই জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, এলাকাভিত্তিক লকডাউন সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে। রাজধানীর যেসব এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে মিরপুর অঞ্চল সবচেয়ে এগিয়ে। মণিপুর, সেনপাড়া, মিরপুর-১০ ও মিরপুর-১১ নম্বর এই তালিকায় রয়েছে।
এসব এলাকায় ১৫ই জুন থেকে লকডাউন ঘোষণা আসবে বলেও জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।