রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য বাসভবনের তালা খুলে দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের চাকরি প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় তারা।
এর আগে সোমবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রেজিস্ট্রার দফতরে অ্যাডহক ভিত্তিতে একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্রলীগের চাকরী প্রত্যাশীরা। সন্ধ্যার দিকে তারা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হন। পরে রাত সোয়া ৯টার দিকে ভিসি বাসভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাতভর অবস্থান করেন ।
বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে অবস্থানস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান উপস্থিত হন। তিনি চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে প্রশাসনের সাথে আলোচনার আহ্বান জানান।
সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল আরিফ ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সাথে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় বসেছে।
ছাত্রলীগের পক্ষে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন, স্বপন আহমেদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানা, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মাহফুজ আল আমিন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাসেল আলোচনায় গেছেন।
আন্দোলন প্রসঙ্গে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহাফুজ আল-আমিন জানান, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমাধান আসবে না, আশ্বাস আসবে না ততক্ষণ পর্যন্ত এখানে থাকবো’।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক মারা গেছেন। ভিসি স্যার মর্মাহত, উনি যেন জানাজাতে যেতে পারেন তাই মানবিক দিক চিন্তা করে উপাচার্যের বাসভবনের তালা খুলে দিয়ে সেখান থেকে সরে এসেছি’।
এ প্রসঙ্গে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমরা তাদের আলোচনার জন্য ডেকেছি। এখানে নিয়োগ চালুর কোনো বিষয় নেই।
এর আগে সোমবার রাত ৯টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে সারারাত অবস্থান করে ছাত্রলীগের নেতারা। পরে সকালে উপাচার্যের বাসভবনের তালা খুলে দিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করে তারা।
সোমবার সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ ভিসি বাসভবনের সামনে অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭টার সময় চাকরি প্রত্যাশী ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদেকুল ইসলাম স্বপন এবং রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে ছয়জনের একটি প্রতিনিধিদল উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে বাসভবনের ভেতরে যান।
তবে উপাচার্য বিশ্রামে থাকায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেননি। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে বাহিরে এসে তারা উপাচার্যের ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। সেখানে আটকা পড়েন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।