বিবাহের আট বছরেও সন্তান না হওয়া এক নারী মাতৃত্বের সাধ মেটাতেই হাসপাতাল থেকে বাচ্চা চুরির পরিকল্পনা করেছিলেন
শুক্রবার সকালের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অজ্ঞাত এক মহিলা ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে ৩ দিন বয়সী এক নবজাতককে নিয়ে উধাও হয়।বাচ্চা হারানোর পর নবজাতকের মা পুলিশের কাছে অজ্ঞাত ওই নারীর বর্ণনা দেন।
এরপর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে ওই নারীকে শনাক্ত করে। শনিবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় ও তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া সেই নবজাতককে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া নবজাতক উদ্ধারের পর উদ্ধার অভিযান বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে রাজশাহী মেট্রোপলিটান পুলিশের পক্ষে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক গনমাধ্যমকে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, অপরাধ করে রাজশাহী নগর ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা নগরীর নিরাপত্তায় সিটিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনেছি পুরো নগরী। এখানে অপরাধ করে কেউ পালিয়ে যেতে পারবে না। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, নবজাতকটি হারিয়ে যাওয়ার পর নগরীর রাজপাড়া থানাকে অবহিত করে তার পরিবার। এরপর আমরা হাসপাতালে যাই। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরা সচল থাকলেও হাসপাতালে বিদ্যুত না থাকায় ফুটেজ পাওয়া যায়নি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেটে আমাদের দুটি সিটিটিভি ক্যামেরা ছিল। সেই ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ আসামি মৌসুমি আক্তারকে গ্রেফতার করে। নবজাতককে তার বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা হারানো সন্তান ফিরে পেয়ে খুশি।
আরএমপি কমিশনার আরও বলেন, ওই নারীকে (মৌসুমি আক্তার) আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। এরপর জানা যাবে, কি উদ্দেশ্যে তিনি নবজাতক চুরি করেছিলেন। তিনি নবজাতক চুরি ও পাচার চক্রের সাথে জড়িত কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
নগর পুলিশ প্রধান আরও বলেন, ওই নারী (মৌসুমি আক্তার) বিবাহিত। কিন্তু আট বছরেও তার সন্তান হয়নি। মাতৃত্বের সাধ মেটাতে তিনি হাসপাতাল থেকে বাচ্চা চুরির পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) মৌসুমি আক্তার রামেক হাসপাতালে যান। এরপর হাসপাতালের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই নবজাতককে তার পছন্দ হয়। তিনি নবজাতককে কোলে নিয়ে আদরও করেন।
পরদিন শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) তিনি আবারও হাসপাতালে যান। সকাল নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার দিকে বাচ্চা নিয়ে তিনি বেরিয়ে যান হাসপাতাল থেকে। ওই সময় নবজাতকের মা ঘুমিয়ে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আবু আহাম্মদ আল মামুন, সহকারী কমিশনার রাকিবুল হাসান, নবজাতকের বাবা মাসুম রবিদাসসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।