তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) খুলনা কর অঞ্চলের সহকারী কর কমিশনার মো. মেজবাহ্উদ্দিন আহমেদকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
মেজবাহ্উদ্দিন খুলনা কর অঞ্চলের আওতাধীন বিভিন্ন কর সার্কেলে কর্মরত থাকার সময়ে সংশ্লিষ্ট কর সার্কেলের করদাতাদের দেওয়া পে অর্ডার, ডিডি, ক্রস চেক ইত্যাদি সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অবৈধভাবে জমা রাখেন। এরপর সুবিধামতো সময়ে নিজের সই করা চেকের মাধ্যমে তিন কোটি ৫০ লাখ ২৬ হাজার ৯২৯ টাকা উঠিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেন।
সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি-৩(খ) ও ৩(ঘ) অনুযায়ী এনবিআরের চাকরি থেকে কেন মেজবাহ্উদ্দিনকে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
এনবিআরের তদন্তে মেজবাহ্উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে ২৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুমোদন দেন। ২৬ জানুয়ারি তাঁকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এনবিআর সূত্র জানায়, মেজবাহ্উদ্দিন আহমেদ পে অর্ডার, ডিডি, ক্রস চেক ইত্যাদি সরকারি কোষাগারে চালানের মাধ্যমে জমা না দিয়ে সোনালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর-২৪১৪২০০০০৬৯৪৬-এ জমা দেন। এখান থেকে নিজের সই করা চেকের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৪ টাকা উঠিয়ে নেন। নওয়াপাড়ার সোনালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর-২৩২৪২০০০০৩০৫৩ চালু করেন। এখানেও করদাতাদের দেওয়া পে অর্ডার, ডিডি, ক্রস চেক ইত্যাদি জমা করেন। পরে তিন লাখ আট হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন।একইভাবে সোনালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর-২৯৫১৩৩০০০৬৫৭-এ জমা করে নিজের সই করা চেকের মাধ্যমে দুই কোটি ১০ লাখ আট হাজার ৪২৩ টাকা তুলে নেন। আর বাগেরহাট ব্র্যাক ব্যাংকে চালু করেন হিসাব নম্বর-০২০১২০৪০১৮৩৯০০১। এখানে করদাতাদের পে অর্ডার, চেক ইত্যাদি জমা করে চার লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলে নেন। এভাবে তিনি দফায় দফায় বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব খুলে টাকা জমা রাখেন এবং পরে তুলে নেন।