চট্টগ্রাম সিটির নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিজয় আমার নয়, চট্টগ্রামবাসীর। এ বিজয় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। নগরবাসীর প্রতিশ্রুতি পূরণে কঠোর পরিশ্রম করবো।’ নগরবাসীর ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরের বহদ্দারহাটে নিজের বাড়ির আঙিনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতিশ্রুতি নয়; কাজে বিশ্বাসী আমি। দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি। তা বিবেচনায় নিয়ে জননেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। জয়ী হয়ে আমি তার প্রতিদান দিতে পেরেছি।
অন্যায় অনৈতিক কাজে কখনো ক্ষমতাকে ব্যবহার করব না। সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করবো সার্বক্ষণ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে যখন কোনো লোভ লালসা আমাকে ছুঁতে পারেনি, এবারও লোভ অনৈতিকতা আমাকে এক ইঞ্চি বিচ্যুতি ঘটাতে পারবে না। কখনো আমি নীতি বিসর্জন দেইনি। এমন ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। স্বকীয়তা নিয়ে নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করে যাব।’
নির্বাচনে ভোটের হার মাত্র সাড়ে ২২ শতাংশ এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, ‘কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। কর্মজীবী মানুষরা ভোটের চেয়ে কাজকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তাছাড়া সরকারি ছুটি না থাকার কারণেও কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে শতভাগ কিংবা ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নগরের জলাবদ্ধতা, হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস-পানি সংকটসহ আঞ্চলিক দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন আমি আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। চাক্তাই খাল সংগ্রাম কমিটির আমি চেয়ারম্যানও ছিলাম। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাই আমি। করোনার সময়ে নিজের যতটুকু সামর্থ্য ছিল ততটুকু সহযোগিতা নিয়ে ছুটে গেছি। ত্রাণ ও সুরক্ষা, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি। আইসোলেশন সেন্টার করেছি। এসব কাজের কারণেই মানুষ আমাকে বিপদের বন্ধু মনে করেছে। মানুষ আমাকে এত পছন্দ করেছে, আমি অভিভূত। কথা দিতে পারি, সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।’
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও জলাবদ্ধতার শিকার। চলমান ছয় হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। অনেক খাল দখল হয়ে গেছে। তবে সেগুলো উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেব। ৪১টি ওয়ার্ডকে ঘিরে আমার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে চাই। নগরের সার্বিক উন্নয়নে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে নতুন চট্টগ্রাম মহানগর গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন রেজাউল করিম।
উল্লেখ্য, বুধবারের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে প্রায় তিন লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নগরবাসীর নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার রেজাউল করিম চৌধুরী।