রাজধানীর মিরপুর ২ এর চার রাস্তার মোড়ে সকাল ১০ টার দিকে দেখা যায়, চারিদিক থেকে অসংখ্য যানবাহনের চলাচল। নেই কোন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য। ষ্টেডিয়ামের একপ্রান্তে একজন ট্রাফিককে অলস সময় কাটাতে যায়।
মিরপুর ২ এর ওভার ব্রীজ এর উপর থেকে তোলা ভিডিও চিত্রে দেখা যাচ্ছে, দেড়’শ গজ দূরে মিরপুর মডেল থানা অবস্থিত। থানা পুলিশের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই এই অবাধ গাড়ি চলাচলে।
অপরদিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্তর এলাকায় আজ ২৭ শে এপ্রিল সকাল ১১ টার দিকে দেখা যায়, গোলচত্তর এর এক কোনায় ৬/৭ জন পুলিশ কয়েকটি রিকশাকে আটকিয়ে জরিমানা করছে। জুলুম সেই খেটে খাওয়া দূর্বলের ওপরেই। একদিকে এই দৃশ্য দেখা গেলেও রাস্তার অন্যন্য সবদিকেই অবাধে চলছে লক্ষ টাকার কার-জীপ গাড়িগুলো যেদিকে পুলিশের কোনও দৃষ্টি নেই।
ঊল্লেখ্য গত ১২ ই এপ্রিল সরকার নিম্নের বিধিনিষেধ জারী করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।
১. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৩. সব ধরনের পরিবহন (সড়ক, নৌ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
৪. শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
৫. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থল, নদী ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।
৬. অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শনসাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়ত করা যাবে।
৭. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে।
৮. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
৯. বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষি শ্রমিক পরিবহনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সমন্বয় করবে।
১০. সারা দেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লেখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদপেক্ষ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।
১১. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।
১২. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমা ও তারাবির নামাজে জমায়েত বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে।
১৩. উপরি-উক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনে সম্পূরক নির্দেশনা জারি করতে পারবে।