সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহান তার চাকুরির দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিনে অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে ১৪১ জনকে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। এই ঘটনার বিষয়ে দেশের গণমাধ্যম গুলোতে স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দেশজুড়ে ঘটনাটি আলোচিত-সমালোচিত ছিলো।
এর প্রেক্ষিতে ওই দিনই শিক্ষামন্ত্রনালয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির কার্যপরিধি হিসেবে বলা হয়, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্যের অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলকরণ, কমিটির দায়-দায়িত্ব নিরূপণপূর্বক প্রতিবেদন পেশ করাসহ আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন প্রদান করতে।’
উক্ত কমিটির আগামী রোববার থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করার কথা।
অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, সাড়ে ছয় মাস আগেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিল, “শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিবর্তন করে যোগ্যতা কমিয়ে দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহান ও তাঁর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। এর মাধ্যমে কম যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক হন উপাচার্যের কন্যা ও জামাতা। এভাবে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্য ৩৪ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।”
ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, “আগের নীতিমালা অনুযায়ী, তাঁদের আবেদন করারই যোগ্যতা ছিল না।” এ জন্য এসব নিয়োগ বাতিল এবং উপাচার্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটি।
কিন্তু দীর্ঘ সময়েও উপাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই সব নিয়োগও বাতিল হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রায় পাঁচ মাস আগে কয়েকটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও এরপর কার্যত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও আটকে থাকে।
কার্যত তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে এম আবদুস সোবহান আরও বেপরোয়া হয়ে শেষ কর্মদিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাবি’তে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১৪১ জনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের নজির সৃষ্টি করে বিদায় নিয়েছেন।