করোনার দ্বিতীয় বছরে তৃতীয় ঢেউ যদি আসে, তা হলে সবথেকে বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে শিশুদের। যাদের বয়স ২ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্বখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ডা. দেবী শেঠি।
ভারতের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই উদ্বেগের কারণ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ সামলাতে আরও কয়েক লক্ষ ডাক্তার, নার্স প্রয়োজন। তৃতীয় ঢেউ এলে আরও কয়েক লক্ষ ডাক্তার, নার্স ও প্যারামেডিক চাই। গত এক বছর ধরে কোভিড সামলাতে সামলাতে ডাক্তার-নার্সদের একটা বড় অংশ ক্লান্ত। আবারও বলছি বয়স্ক রোগীদের সামলাতে তাঁদের অতটা বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু তৃতীয় ঢেউ যদি আসে তা হলে শিশুরা আক্রান্ত হবে। তখন এই ক্লান্ত ওয়ার্কফোর্স দিয়ে তাদের সামলানো যাবে না।
ডা. শেঠি আরও বলেন, প্রথমেই বলে রাখি আমি এপিডেমোলজিস্ট নই বা ভাইরোলজিস্ট নই। অতি মহামারীর চরিত্র সম্পর্কে যেটুকু জ্ঞান রয়েছে তার ভিত্তিতেই বলছি যে কোভিডের সংক্রমণ আপাতত চলবে। আগামী বছর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত তা কমবেশি ভোগাবে। সুতরাং সে ব্যাপারে এখন থেকেই মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, তৃতীয় ঢেউ আসবেই কিনা সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন। মহামারীর চরিত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় ঢেউ সবসময়েই ভয়াবহ হয়। তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্রতা কম থাকে। তবে তৃতীয় ঢেউ যদি আসে তা হলে সব থেকে আশঙ্কা ছোটদের নিয়ে। কারণ, ততদিনে বয়স্কদের টিকাকরণ হয়ে যাবে। অধিকাংশেরই ইমিউনিটি থাকবে। কিন্তু শিশুদের টিকাকরণ তখনও হবে না। ফলে তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে বেশি। তাই এখন থেকেই জোর দিতে হবে ইয়ং পেরেন্টস তথা কমবয়সী বাবা মায়ের টিকাকরণে।
ডা. শেঠির মতে, বয়স্ক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সমস্যা কম। কেউ যদি অক্সিজেন বেড বা আইসিইউ বেডে থাকেন তা হলে চব্বিশ ঘণ্টা অ্যাটেন্ডেন্ট লাগে না। কিন্তু কোনও কোভিড আক্রান্ত শিশু অক্সিজেন বেডে বা আইসিইউ-তে থাকলে সে সব সময়ে তার বাবা বা মাকে পাশে চাইবে। তাই ততদিনে তার বাবা বা মায়ের টিকাকরণ হয়ে যাওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারগুলো যে নাকানি-চোবানি খাচ্ছে তা স্পষ্ট। তবে রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার। যে সমালোচনার ধাক্কায় ব্র্যান্ড মোদিও টলমল।
সূত্র : দ্য ওয়াল।