আদালতের নির্দেশের পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো উদ্যোগই নেয়নি গ্রিন লাইন পরিবহন। এরই মধ্যে তাদের পক্ষে মামলায় যুক্ত হতে আদালতে আবেদন করেছে বাস মালিকদের সংগঠন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করে।
এর আগে, গত ৪ এপ্রিল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১০ এপ্রিলের মধ্যে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে সময় বেঁধে দিয়েছিল।
জানা যায়, গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারান প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকার। পরে গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
রাসেলের বক্তব্য শোনার পর গত ১২ মার্চ গ্রিন লাইন পরিবহনের ব্যাখ্যা শুনে হাইকোর্ট দুই সপ্তাহের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল।
গ্রিনলাইন পরিবহন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েও বিফল হওয়ার পর হাইকোর্ট ১০ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ পরিশোধের সময় বেঁধে দিয়ে বলে, এই সময়ের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে গ্রিনলাইনের সব বাস জব্দ করা হবে।
এদিকে পরিবহন মালিকদের সংগঠন আদালতে আবেদন করার পর মঙ্গলবার দুপুরে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুকে প্রস্তাব দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এই সংসদ সদস্য বলেন, এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমি মানসিকভাবে ভিকটিমের পক্ষে। টাকার জন্য তো বিবেক বিক্রি করে ওই পক্ষে যেতে পারি না। এ জন্য আমাকে টাকা অফার করেছিল কিন্তু আমি বললাম যে না, আমি মানসিকভাবে বিবেকের তাড়নায় একটা পক্ষে। আমি যে কোনো মামলায় যে কোনো পক্ষে যেতে পারি না। বিবেক বলতে একটা কথা আছে। আমি বিবেক বন্ধক রেখে ওকালতি করতে পারি না।
গ্রিনলাইন পরিবহনের আইনজীবী অজিউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাতে আমি ছিলাম না। এটা আমি জানিও না। এটা মনে হয় অন্য উকিলরা করতেছে।
রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা বলেন, তারা (বাস মালিক সমিতি) নাকি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১২ মার্চের (হাইকোর্টের) আদেশটা স্থগিত চেয়ে প্রেয়ার দিছিল। সেটা নট টুডে করে আগামীকাল (আজ বুধবার) ২টায় শুনানির জন্য রেখেছে।