fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অপরাধযারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়- প্রান হারানো রাফির বাবা

যারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়- প্রান হারানো রাফির বাবা

আমার একমাত্র মেয়ে নুসরাত। সেদিন সে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল, আর তার সাথে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমার ভিতরে কি চলছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। মেয়ে হারানোর বেদনায় কলিজায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এখন আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই। শুধু আমার মেয়ের হত্যার দ্রুত বিচার চাই। যারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়’ কেঁদে কেঁদে এভাবেই মেয়ের হত্যার বিচার চান নুসরাত জাহান রাফির বাবা একেএম মানিক।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যখন নুসরাতের লাশের ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল চলছিল তখন বাইরে অপেক্ষমাণ বাবা এই কথা বলেন। এর আগে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নুসরাত মারা যান।

নুসরাতে বাবা একেএম মানিক বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার মেয়ের জন্য অনেক করেছেন। এখানকার চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাঁচাতে পারেননি।’

দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা মেয়ের বিষয়ে সকল কিছুই প্রকাশিত হয়েছে। আমার দাবি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার যেন হয় দায়ীদের।’

এর আগে সকাল ৯টায় নুসরাতের মরদেহ মর্গে নেয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।

এদিকে নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনায় শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়েছে। জিডি নং ৬০২। তার মরদেহ গ্রহণ করতে নুসরাতের বাবা একেএম মানিকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জেনারেল মাসুদ চৌধুরী ও সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা এর আগে তাকে যৌন নিপীড়ন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। নুসরাতের বাবা একেএম মানিক

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে মামলা তুলে নেওয়া কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

গত সোমবার (৮ এপ্রিল) দগ্ধ নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ঢামেকের ডাক্তাররা জানান, নাজুক শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া সম্ভব নয়। বুধবার রাতে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে নুসরাত মারা যান।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments