ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার করেছেন ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমণি। সোমবার সাভার থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ অজ্ঞাতনামা ছয় জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ধর্ষণচেষ্টা শ্লীলতাহানি ও মারধর জোরপূর্বক নেশাও চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানো ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুন) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজি মাইনুল ইসলাম।
রূপনগর থানা পুলিশের এস আই ফারুক বলেন, সোমবার ভোরে রূপনগর থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরী মনি। অভিযোগে তিনি ঢাকা বোর্ড ক্লাব লিমিটেডের নাসির উদ্দিন মাহমুদের কথা উল্লেখ করেছেন।
এস আই ফারুক আরও বলেন, আমরা পরী মনির বাসায় গিয়ে তার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি ও বক্তব্য নিয়েছি। তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। আমি সেই অভিযোগ সাভার থানার কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। তারা এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, পরীমনি পুলিশের প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত সেবা পাবেন। উপযুক্ত বিচারও পাবেন।
বনানী থানা পুলিশকে এজাহারে পরী মনি বলেছেন, বুধবার রাত পৌঁনে ১১টার দিকে তার এক বন্ধু (অমি) বাসায় আসেন। বাসা থেকে তাকে উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জিমি (ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী)। বোট ক্লাবে যাওয়ার পর সেখানে সাত/আটজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের মুরব্বি ছিলেন নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ)। তিনি বোর্ড ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। পরী মনিকে চড় থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে তার পরণের পোশাক মদ্যপ অবস্থায় টেনে ছেড়া হয়েছে। তার সঙ্গে থাকা জিমিকে গলায় একজনের শার্ট পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর আগে রবিবার (১৩ জুন) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের রূপনগর থানা থেকে পুলিশের কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়েছিলেন অভিযোগ রেকর্ড করার জন্য।
রবিবার পরীমনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ তুলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। প্রতিকার চেয়ে তিনি বনানী থানায় গিয়ে কোন সাড়া পাননি বলে অভিযোগ করেন।
এর আগে রবিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে বিচার চেয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য কামনা করেন পরী মনি। যাতে তিনি অভিযোগ করেন যে সম্প্রতি তাকে ‘ধর্ষণ এবং হত্যা করার চেষ্টা’ করা হয়েছে। বনানী থানার পুলিশ রবিবার বলেছিল, তারা কোনো অভিযোগ পায়নি। রবিবার রাতেই বনানীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী। এ সময় তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন।
অভিযোগে তিনি জানান, ঘটনার পর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিনি বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন, সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা তার অভিযোগ রেকর্ড করেননি। এরপরে গত চারদিনেও তিনি বিভিন্নভাবে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছেন। একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী তাকে বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন।
পরীমনি বলেন, চারদিনে তার ভাষায়, তিনি ‘কোথাও বিচারের কোন আশা’ পাননি। সেজন্যই ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন।