চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদ ওই রাতে পরীমণিকে সিনেমার কাজের ব্যাপারে আলোচনার জন্য বোট ক্লাবে নিয়ে যান। ওই নায়িকার বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমির মাধ্যমে পরীমণি সেখানে যান। ক্লাবে গিয়ে কাজের বিষয়ে পরিমণী আলোচনা উঠালে নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, আগে খাওয়া দাওয়া হোক, পরে কথা বলি। এরপর দ্রুত ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে।
তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার দিন রাতে পরীমণি ঢাকা বোট ক্লাবে যান রাত ১২ টার সময়। সেসময় ক্লাব ছিলো বন্ধের পথে। এরপরও নাসির ইউ মাহমুদসহ তাঁর কয়েকজন বন্ধু ক্লাবের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। পরীমণি সেখানে যাবার পর তাকে ড্রিংকস অফার করা হয়। সামান্য ড্রিংকস নেয়ার পরপরই পরীমণি অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। পুলিশের ধারনা তার ড্রিংকস গ্লাসে ক্ষতিকর কিছু মিশিয়ে দেয়া হয়েছিলো। একসময় পরীমণি প্রায় অচেতন হয়ে পড়লে নাসির ইউ আহমেদ তাঁর গায়ে হাত দেন। পরীমণি সম্বিত ফিরে পেলে সেখানে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়। পরে সিকিউরিটি এবং অন্যান্যদের সহায়তায় পরীমণিকে সেখান থেকে বের করে আনা হয়।
এদিকে, বিভিন্ন ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পরীমণির সাথে ঘটনা ঘটিয়ে নাসির ইউ আহমেদ পাঁচদিন পর্যন্ত অধরা থাকেন। এইসময় তিনি বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে তাঁর বন্ধু বান্ধবদেরকে ওই রাতে কি ঘটেছিলো তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। অনেকটা গর্ব করেই তিনি এসব কথা যখন বলছিলেন তখন বন্ধু বান্ধবরা তাকে সাবধানও করেন। তাঁরা তাকে আত্মগোপনেও চলে যেতে বলেন।
এসময় তিনি বলেন, এই পুঁচকি মেয়ের জন্য আমি আত্মগোপনে যাবো। এর কয়েকদিন পর পরীমণির ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং সাংবাদিক সম্মেলন সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। নাসির ইউ মাহমুদ তাঁর দীর্ঘদিনের সাথী অমিকে নিয়ে উত্তরার একটি বাসায় আত্মগোপনে যান। ক্লাবের বাইরে সময় কাটানোর জন্য তারা এই বাসাটি ভাড়া করেন। সেখান থেকে তিনজন মেয়েসহ ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে, পরীমণির ঘটনা চাপা দেয়ার জন্য গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাংচুরের ঘটনা সাজান ওই ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট এ কে এম আলমগীর হোসেন। ঘটনার তারিখ তিনি ৭ জুন উল্লেখ করলেও তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ১৬ জুন। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে এ ধরনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ক্লাবের পক্ষ থেকেও থানায় এ ধরনের কোন অভিযোগ করা হয়নি।