রাজধানীর আবদুল্লাহপুর পুলিশ চেকপোস্টে আটকা পড়ছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা। অনেকে আবার হেঁটেই রওনা দিয়েছেন। আজ শনিবার সকাল থেকে আবদুল্লাহপুর মোড়ে অবস্থান করে এ চিত্র দেখা গেল।
সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে গত দুই দিনের মতো আজকেও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আবদুল্লাহপুর মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। সকাল থেকেই চেকপোস্ট ঘিরে অবস্থান করছেন অসংখ্য পুলিশ সদস্য। কোনো যানবাহন আসতে দেখলেই পথ রোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যান্য যানবাহনের মতো আটকা পড়েছে ভিন্ন পোশাক কারখানার মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। যানবাহন নিয়ে চলাচল করায় তাঁদের পথ আটকে দিচ্ছেন তাঁরা। এ সময় নিজেদের পরিচয়পত্র বা কারখানার কাগজপত্র দেখিয়েও ছাড়া পাচ্ছেন না তাঁরা।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দেখা যায়, যানবাহন আটকে দেওয়ায় চেকপোস্টের পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকটি পোশাক কারখানা ও বায়িং হাউসের মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। পুলিশ তাঁদের গাড়ি আটকে দেওয়ায় জড়ো হয়েছেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের প্রত্যেকেই নিজেদের পরিচয়পত্র, কারাখানার কাগজপত্র দেখিয়েছেন বা যাতায়াতের কারণ উল্লেখ করছেন। কিন্তু পুলিশ যানবাহনসহ তাঁদের যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ আবার হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।
একটি বায়িং হাউসের মালিক মো. জহুরুল ইসলাম। কারখানা পরিদর্শনে যাবেন গাজীপুরের সালনা এলাকায়। সকাল নয়টার দিকে এসে আটকা পড়েছেন চেকপোস্টে। পুলিশ তাঁকে যেতে দিলেও গাড়ি ছাড়ছে না। এদিকে সালনা যাওয়ার অন্য কোনো উপায় পাচ্ছেন না তিনি। তাই অন্য সবার মতো তিনি বারবার তাঁর গাড়িটি ছাড়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
কথা হলে ক্ষোভ ঝেড়ে জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এইটা কোনো কথা! কারখানা খোলা, অথচ আমাদের যেতে দিচ্ছে না। আমরা যেতে না পারলে কারখানা চলবে কীভাবে? উৎপাদন হবে কীভাবে? আর উৎপাদন না হলে তো শ্রমিকদেরও বেতন দিতে পারব না। এই জিনিসটা বারবার পুলিশ ভাইদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা কিছুতেই বুঝতে পারছে না। আজকে আমাদের একটি কারখানা পরিদর্শন করতেই হবে। নয়তো কাজের সব অর্ডার বাতিল হয়ে যাবে আর সালনা এত কাছেও না যে হেঁটে যাব।’
জহুরুলের মতো একই আকুতি জানাতে দেখা যায় অপু সারোয়ার, মো. হাসান, মো. জাবেদ আল হাবিব, মো. নাজিম আক্তারসহ আরও অনেককে।
চেকপোস্টটিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. বদরুল হাসান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পোশাক কারখানার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের যেতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আমরা কোনো যানবাহনসহ তাঁদের যেতে অনুমতি দিচ্ছি না। তাই তাঁদের আটকে দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু তাঁরা যাবেন কীভাবে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনায় নিজ নিজ কর্মস্থলে থেকে কাজ করার কথা রয়েছে। আমরা সেই নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করছি।’ সূত্রঃ প্রথম আলো।