ষষ্ঠ দিনে আজ রাজধানীর অনেক সড়ক থেকে কঠোর বিধিনিষেধ উধাও হয়ে গেছে! দিন যতই যাচ্ছে রাজধানীর সড়কে মানুষ এবং যানবাহনের চাপ ততোই বাড়ছে। সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর বিধি-নিষেধ মানাতে একদিকে যেমন তৎপরতা চালাচ্ছে, অন্যদিকে বিধি-নিষেধ ভাঙতে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়েই মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে।
রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় বিধিনিষেধ একেবারেই ভেঙে পড়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ এলাকার চিত্র প্রায় স্বাভাবিক সময়ের কাছাকাছি দেখা গেছে। এই এলাকায় কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে এলাকার রাস্তাঘাট থেকে মনে হয়নি। কিছু কিছু মিনিবাস চলেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রিক্সা এবং কিছু হিউম্যান হলার যাত্রী পরিবহন করেছে। হেঁটে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিলো রাস্তায়। অনেকে পায়ে হেঁটেই কর্মস্থলের দিকে রওয়ানা হয়েছেন।
এই এলাকার শনির আখড়া থেকে সায়দাবাদ পর্যন্ত এলাকাতেও একই ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধের প্রতি কারো কোন তোয়াক্কা নেই। যাত্রাবাড়ী মোড়ে মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ের পাশাপাশি রাস্তায় রয়েছে রিক্সার দাপট। হাজার হাজার রিক্সার পাশাপাশি শত শত মোটরসাইকেল চলাচল করছে। মতিঝিল এলাকাতেও আজ যানবাহন চলাচল আরো বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরসাইকেলের চাপ এখানে বেশি ছিলো।
এদিকে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও যানবাহন ও মানুষের চলাচলে কোনো বাঁধা নেই। সকালে এখানে চেকপোস্টের পাশেই ২০ থেকে ২৫ জনের মত পথচারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদেরকে পুলিশ আটক করেছে। মিরপুর জোনের ট্রাফিক বিভাগের এসি মিজানুর রহমান জানান, তারা যৌক্তিক কারণ ছাড়া বের হয়েছে। তাদেরকে আইনানুগ ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই তারা রাস্তায় বেরিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যানবাহন এবং মানুষের চলাচল গত কয়েক দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ব্যাংকসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু হওয়ায় মানুষ রাস্তায় বের হয়ে আসছে। যানবাহনের চাপ বাড়ল পুলিশ সব যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হলেও মানুষের ভিড় এবং যানবাহনের সংখ্যার কমতি নেই। এখানে সেনাসদস্যরা রিকশা, মোটরসাইকেল ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিধি নিষেধ এর মধ্যেই আবার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি কাজও চলছে। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, আসাদগেট, শ্যামলীসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
এদিকে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও দোকান খোলা রাখতে চায় দোকান মালিকরা। সমিতি। গতকাল সোমবার তারা গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। এরপরই ওয়াজ সকাল থেকে নগরীর প্রায় সব জায়গাতেই অনেক দোকানপাট আংশিকভাবে খুলতে দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর পান্থপথের বেশ কয়েকটি ফার্নিচারের দোকান বিশেষ করে যেগুলো অলিগলির একটু ভেতরে রয়েছে সেগুলোতে বেচাকেনা চলছে। এছাড়া ছোট ছোট মার্কেটগুলোর দোকানপাট খুলেছে। সব এলাকার অলি গলির ভেতরের দোকানপাট পুরোপুরি খোলা রয়েছে। কাঁচাবাজারে প্রতিদিনের মতোই ভিড় লেগেই ছিলো। কাউকে স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে কোন ধরনের তোয়াক্কা করতে দেখা যায়নি। সূত্রঃ ভোরের কাগজ।