প্রথম ম্যাচেই ধরাশায়ী অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়ে প্রথম ম্যাচেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এই জয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ।
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মাঝারি লক্ষ্য গড়েও বোলিং নৈপুণ্যতায় অজিদের হারিয়েছে স্বাগতিকরা। স্পিনার নাসুম আহমেদের দারুণ বোলিংয়ে ২৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘হোম অফ ক্রিকেট খ্যাত’ মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩১ তোলে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রানে থামে অজিরা। বোল হাতে ক্যারিয়ার সেরা চার উইকেট নেন নাসুম।
মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে এসে ইনিংসের ওভারের প্রথম বলেই শেখ মেহেদীর শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি। অপর প্রান্তে থাকা জশ ফিলিপে পরের ওভারে ফেরান নাসুম আহমেদ। ৫ বলে ৯ রান করে ফেরেন তিনি। তৃতীয় ওভার বল করতে এসে প্রথম বলেই নতুন ব্যাটসম্যান মোয়াসেস হেনরিকসকেও সাজঘরে ফিরিয়ে সফরকারীদের ভিত নাড়িয়ে দেন সাকিব আল হাসান।
মাত্র ১১ রানে তিন উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে খাদ থেকে টেনে তোলেন মিচেল মার্শ ও অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। এই দুই ব্যাটসম্যানের ৩৮ রানের জুটিতে আঘাত হানেন নাসুম। দশম ওভারের চতুর্থ বলে ফাইন লেগে মুস্তাফিজের দারুণ ক্যাচে ফেরেন অজি অধিনায়ক। ২৩ বলে মাত্র ১৩ রান করেন তিনি।
নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাস্টন অ্যাগারকে নিয়ে আবারও রানের তোলায় মনযোগী হয়ে উঠেন মার্শ। দু’জনের জুটি বেশিদূর এগোতে দেননি নাসুম। তার তৃতীয় শিকার হন অ্যাগার। যদিও অ্যাগার নিজের পা স্ট্যাম্পে লাগিয়ে হিট উইকেট হন। নিজের পরের ওভারে এসে উইকেটে থিতু হওয়া মার্শকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফেরান নাসুম।
১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অ্যান্ড্রু টাইকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল। একই ওভারের চতুর্থ বলে অ্যাডাম জাম্পাকেও ফেরান এই পেসার। অবশ্য তার আগের ওভারে অ্যাস্টন টার্নারকে ফিরিয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ পর্যন্ত সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান তোলে অজিরা। ২৩ রান জয় পায় বাংলাদেশ।
এর আগে ব্যাট করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। চতুর্থ ওভারে ওপেনার সৌম্য সরকার নিজেই নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন। হ্যাজলউডের বল কাট করতে গিয়ে ব্যাটে করে স্ট্যাম্পে নিয়ে আসেন এই ওপেনার। অন্যপ্রান্তে থাকা আরেক ওপেনার নাঈম শেখের ব্যাটে ভালোই রান তোলে বাংলাদেশ। তবে পাওয়ার প্লের পরের ওভারে তাকে সাজঘরে ফেরান অ্যাডাম জাম্পা। ২৯ বলে ৩০ রান করে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন নাঈম।
তৃতীয় উইকেটের জুটিতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ। পাঁচ রানের মাথায় জীবনও পেয়েও যান রিয়াদ। অ্যাগারের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে কানায় লেগেছিল টাইগার অধিনায়কের। তবে স্লিপে অ্যাশটন টার্নার রাখতে পারেননি ক্যাচটা। জীবন পেয়ে ইনিংস বেশিদূর নিতে পারেনি রিয়াদ। হ্যাজলউডকে প্রথম বলে ছয় মেরে পরের বলে লং অফে হেনরিকসের দারুণ ক্যাচে ফেরেন তিনি। দু’জনের ৩২ বলে ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন হ্যাজলউড। ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ।
অধিনায়কের বিদায়ের পর নতুন ব্যাট হিসেবে ক্রিজে এসে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। মাত্র ৩ রান করে অ্যান্ড্রু টাইয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে পাড়ি জমান তিনি। খানিক সময় পরই দীর্ঘ সময় উইকেটে থিতু হয়ে থাকা সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার পূর্ণ করেন হ্যাজলউড। ৩৩ বলে ৩৬ রান করে ব্যাটের কাণায় লেগে বোল্ড হন তিনি।
ষষ্ঠ উইকেটে ব্যাট করতে এসে মাত্র ৪ রান করে থামেন শামীম পাটোয়ারি। ১৮তম ওভারের শেষ বলে মিচেল স্টার্কের ইয়র্কায় বোল্ড হন শামীম। একপাশ আগলে রাখা আফিফ হোসেনের সঙ্গে শেখ মেহেদী হাসানের ১৭ রানের জুটিতে ১৩১ রান তোলে বাংলাদেশ। শেষ বলে বোল্ড হন আফিফ। ২৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন হ্যাজলউড।