fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িরংপুরকুড়িগ্রামপ্রেমিকের গোপনে বিয়ের খবরে প্রেমিকার চিরকুট লিখে আত্মহত্যা

প্রেমিকের গোপনে বিয়ের খবরে প্রেমিকার চিরকুট লিখে আত্মহত্যা

এক প্রেমিক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার প্রেমিকাকে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে গোপনে বিয়ে করেন। এ খবর পেয়ে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে তার প্রেমিকা।

গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক-শিমুলবাড়ী এলাকায় ঘটেছে এমন ঘটনা।

আত্মহত্যা করা ওই প্রেমিকার নাম- মমতা মিতু (১৬)। সে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক-শিমুলবাড়ী এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের মেয়ে এবং শিমুলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আর তার প্রেমিক রাজু মিয়া (২৩) একই এলাকার ভ্যান্ডার মকু মিয়ার ছেলে ও অনার্সের ছাত্র।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর ধরে মিতু ও রাজুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাজু ভালোবেসে মিতুকে একটি দামী স্মার্টফোনও উপহার দেন। এ অবস্থায় গত ৩০ জুলাই মিতুর বাড়িতে দুজনকে এক ঘরে পেয়ে পরিবারের লোকজন আটক করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাজুকে থানায় নিয়ে যায়।

এরপর থানায় পৌঁছে কিশোরীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় রাজুর পরিবার। এ কারণে মিতুর পরিবার ধর্ষণের মামলা না দিলে সন্দেহজনক আটক মামলা করে পুলিশ। পরে রাজুকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

তবে জামিনে বেরিয়ে এসে বিয়ে করার কথা থাকলেও গত শনিবার গোপনে অন্যত্র বিয়ে করে রাজু। গতকাল রোববার বৌভাতে তার বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যায়নসহ গান বাজিয়ে আনন্দ চলছিল। সেটা শুনতে পেয়ে এদিন বিকেলে ঘরের ভেতর গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে মিতু। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

চিরকুটে লেখা, আমি মমতা মিতু, ‘আমি রাজুকে খুব ভালোবাসি, রাজুর জন্য আত্মহত্যা করলাম। কারণ আমি ও রাজু দুজনেই দুজনকে খুব ভালো বাসতাম। কিন্তু রাজুর মা-বাবা আমাদের সর্ম্পকটা মানতে চান না। তাই রাজুর বিয়ে দিয়েছে। আজ ওর বৌ-ভাত, আমি এটা মানতে পারছি না। তাই আমি এই পৃথিবী ছাড়লাম। কিন্তু এই শাস্তি আমি একাই ভোগ করছি না। আমি চাই আমাদের এই সর্ম্পকটার মাঝে যারা বাঁধা ছিল, তারা আইনি শাস্তি পায়। ইতি মিতু—।’

মিতুর খালা রুজিনা আক্তার ও মামা মমিনুল ইসলাম জানান, রাজুর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক এলাকার সবাই জানে। এমনকি থানা পুলিশও জানেন। রাজুর গত ৩০ জুলাই আমার ভাগনির সঙ্গে দেখা করতে আসে এবং এক ঘরে ছিল। সে সময় তাকে আটক করা হয়। পরে পুলিশ এসে রাজুকে থানায় নিয়ে যান।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে আমরা ধর্ষণ মামলা না দিলে পুলিশ সন্দেহজনক মামলা দেয়। পরে জামিনে এসে মিতুকে বিয়ে না করেই গতকাল গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে রাজু। রাজুর বিয়ের কথা শুনে আমার ভাগনি আত্মহত্যা করেছে। আমরা প্রতারক রাজুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় রজব আলী কুলু ও আশরাফুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, মেয়েটির বাবা নেই। এই এতিম মেয়েটার সঙ্গে রাজু অবিচার করেছে। মেয়েটার সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। এই অসহায় মেয়েটিকে বিয়ে না করে গোপনে অন্য মেয়ে বিয়ে করায় মেয়েটা ক্ষোভে-দুঃখে আত্মহত্যা করেছে।

স্থানীয় মিলন ও রাজ জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রাজু ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। আমরা তার দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে প্রেমিক রাজু মিয়ার ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া য়ায়।

এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ বলেন, সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীর মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে। যে চিরকুট পাওয়া গেছে সেটা এক্সপার্ট দিয়ে পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। এটা তারই লেখা কিনা। সূত্রঃ আমাদের সময়।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments