তালেবানের অনুমতি না পাওয়ায় চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের আফগান ছাত্রীরা কাবুল এয়ারপোর্টের ভেতরে ঢুকতে পারছেন না । অভাবনীয় দুর্ভোগ ও উৎকন্ঠায় বিমানবন্দরের বাইরে সময় কাটছে তাদের । অনিশ্চয়তার মধ্যে বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। বিমানবন্দর এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা নতুন করে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও তারা আশায় আছেন কখন অনুমতি মিলবে ।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষায় থাকা এমন ১৬০ আফগান ছাত্রীর সঙ্গে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরার জন্য অপেক্ষায় আছেন ১৫ বাংলাদেশিও ।দেড় বছর আগে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে এসব ছাত্রীরা নিজ দেশে যান । এখন বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টি খোলার প্রস্তুতি শুরু হওয়ায় তারা চট্টগ্রামে ফিরতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ।
আফগানিস্তানের সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানি আফগান ওয়্যারলেসে কাজ করতেন বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার রাজিব বিন ইসলাম । তিনি শুক্রবার কাবুল থেকে টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ‘কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকতে গতকাল আমরা ছয় থেকে সাত বার চেষ্টা চালিয়েছি । কিন্তু সফল হইনি । মার্কিন বাহিনী ও তালেবানের উভয়ের অনুমতি ছাড়া কেউ সেইফ প্যাসেজ পাচ্ছেন না । আমরা সেইফ প্যাসেজের অপেক্ষায় আছি।
আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর বিভিন্ন দেশ নিজ নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন সৈন্য, দূতাবাস কর্মী, মার্কিন বাহিনীতে কর্মরত অনুবাদকসহ অপরাপর কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আফগানিস্তানের বাইরে নিয়ে আসার জন্য কাবুল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিতে ৬০০০ হাজার মার্কিন সৈন্য, ১০০০ ব্রিটিশ সৈন্য এবং ন্যাটো সৈন্যরা মোতায়েন আছে।
আফগান ছাত্রীদের বাংলাদেশে আনার জন্য জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআর একটি সুপরিসর এয়ারক্রাফট ভাড়া করেছে । মার্কিন বাহিনী ও তালেবানের অনুমতি পেলে তাদের নিয়ে বিমানটি বাংলাদেশে আসবে । বিমানটিতে কিছু আসন খালি থাকায় আফগানিস্তানের একটি টেলিকম কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার ও ব্র্যাকে কর্মরত বাংলাদেশি যারা এখন আটকে পড়েছেন, তারাও দেশে ফিরবেন ।
রাজিব জানান, মার্কিন বাহিনী ও আফগান কতৃপক্ষ যৌথভাবে আফগান ওয়্যারলেস কোম্পানিটি চালু করেছে ।
জানতে চাইলে রাজিব বলেন, কাবুলের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক । গাড়ি চলছে । দোকানপাট খুলেছে । রাস্তায় তালেবানের টহল আছে । ভয়ভীতি ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে ।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইটটি ছাড়ার অনুমতি আগে দেওয়া হয়েছিল । তাদের বোর্ডিং পাসও রেডি ছিল । এতগুলো আফগান মেয়ে এক সঙ্গে দেশের বাইরে গেলে সুনাম ক্ষুণ্ন হয় কিনা তা নিয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষ ভাবতে শুরু করায় সেইফ প্যাসেজ পেতে বিলম্ব হচ্ছে । তালেবানদের বোঝানো হচ্ছে, মেয়েরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন না । তাদের বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে, তাই তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যাচ্ছেন ।
রাজিব বিন ইসলাম বলেন, সেইফ প্যাসেজ পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ ।
এদিকে, আফগানিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের পরিবারে বেশ উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। সূত্রঃ যুগান্তর।