পাবনায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলার ইতিহাসকে ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে ‘শেকড় থেকে শিখরে’ ভাস্কর্য।
এই ভাস্কর্যের দু’পাশে রয়েছে তিনটি করে স্তম্ভ। যাতে সিমেন্ট কেটে অঙ্কিত হয়েছে ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির উত্থান-পতন ও উন্নয়নের ধারা। মূল ভাস্কর্যের এক পাশে ২৬টি কলামের সীমানা প্রাচীর রয়েছে। এই বেষ্টনীর প্রত্যেকটি কলামে সংক্ষিপ্ত আকারে লিপিবদ্ধ হয়েছে নবাব সিরাজউদ্দৌলা থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ‘৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত সচিত্র ইতিহাস।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে নির্মিত এ ম্যুরাল ২০১৮ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস সম্পর্কে সহজেই জানতে পারছেন বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযোদ্ধারা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন পাবনার বেড়া অঞ্চলের হাজারো মানুষ। অনেকেই শহীদ হন। ইতিহাস মতে, বেড়ার ডাববাগান যুদ্ধই একাত্তরের প্রথম সংঘটিত সম্মুখ যুদ্ধ। এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি পূরণে নগরবাড়ী ঘাটের অদূরে নাটিয়াবাড়িতে ধোবাখোলা করোনেশন স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের পাশে নির্মাণ করা হয় ‘শেকড় থেকে শিখরে’ নামে এ ম্যুরাল ভাস্কর্য।
উপজেলার নগরবাড়ি ঘাটের নাটিয়াবাড়ি নামক স্থানে নগরবাড়ি-পাবনা মহাসড়ক সংলগ্ন ধোবাখোলা করোনেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের পাশে পাবনা-২ আসনের (বেড়া-সুজানগর) সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তরুণ শিল্পী বিপল্গব দত্ত প্রায় দেড় বছর নিরলস পরিশ্রমের পর নির্মাণ করেন বহুমাত্রিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ এ ভাস্কর্য।
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোক্তা পাবনা-২ আসনের (বেড়া-সুজানগর) সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু বলেন, ভাস্কর্যের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম এবং মানুষজন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে। এই ভাস্কর্য শুধু একটি ভাস্কর্য নয়, এটি একটি ইতিহাস।
নগরবাড়ি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এস এম ফজলুল হক বলেন, তরুণ প্রজন্ম যখন এই ইতিহাসগুলো জানতে পারবে তখন বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের একটা পূর্ণাঙ্গ ধারণা আসবে।
পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ২০১৬ সালে ব্যক্তিগত অর্থায়নে এই ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেন। বহুমাত্রিক এই ভাস্কর্য নির্মাণ করেন স্থানীয় শিল্পী বিপ্লব দত্ত।
আজিজুল হক আরজু বলেন, সমগ্র জাতির কাছে এটিকে একেবারেই তাদের মাথা-মগজের ভেতরে দেবার জন্যই এই স্থাপত্য নির্মাণ কাজটি করেছি।