গাজীপুরের শ্রীপুরে বাবার অগোচরে তার বাড়ি থেকে ছ’মাস বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায় তার মা। পরে ৫ লাখ টাকায় নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাজিরচর গ্রামের নুরুজ্জামানের কাছে বিক্রি করে দেন নিজের উদরে ধরা এই শিশুকে। শিশুকে হারিয়ে বাবা প্রায় পাগল হয়ে যান। হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। দুই মাস খোঁজাখুঁজির পর সন্তানকে না পেয়ে মামলা করেন শ্রীপুর থানায়।
শিশুটির বাবা জাহিদুল ইসলাম গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় গত ১০ই সেপ্টেম্বর মামলা রুজু হয়।
অবশেষে অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রীপুর থানার পুলিশ গতকাল নরসিংদী থেকে শিশুকে উদ্ধার করে বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন। গ্রেপ্তার করা হয় তার মাকেও।
অভিযুক্তরা হলেন, বগুড়া সদর উপজেলার শাহীন মিয়ার মেয়ে শামীমা আক্তার (২৪), তার স্ত্রী ফজিলা বিবি (৪৫), নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে নুরুজ্জামান (৪৫)। অভিযুক্ত শামীমা শিশুটির মা।
শিশুর বাবার ভাষ্যমতে, শামীমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হলে তারা বিগত ২০১৯ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের পর গত বছরের ডিসেম্বরে তার মেয়ের জন্ম হয়। শিশু জন্মের পর তার বয়স যখন ৬ মাস তখন তার বাবা শিশু ও তার মাকে বাড়িতে রেখে চাকরির জন্য নরসিংদীতে যান। পরে গত ১২ই জুন শিশুকে নিয়ে তার মা বাড়ি থেকে চলে যান। এ সময় সে মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করেন। এমন খবরে বাড়িতে চলে এসে শিশু ও তার মাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন জাহিদুল। দুই মাস তাদের সন্ধান না পেয়ে তিনি গাজীপুর আদালতে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় আদালত শ্রীপুর থানাকে মামলা গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি তার শ্বশুর ও শাশুড়ি। তার অনুপস্থিতিতে সম্পর্ক ভাঙতেই তারা শিশুটিকে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন। তাদের পরিকল্পনা মতোই ৫ লাখ টাকায় তার মেয়েকে বিক্রি করে দেন।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) অংকুর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, শিশুটির বাবার অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালতের নির্দেশে নিয়ে গত ১০ ই সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় মামলা রুজু হয়। পরে তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গত রোববার রাতে নরসিংদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুর মা ও নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।