সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার প্রবাসী সাংবাদিক কনক সরোয়ারের বোন নুসরাত শাহরিন রাকাকে দুই মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এই আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
গত ৬ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় রাকার তিন দিন এবং মাদক মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। উভয় মামলায় রিমান্ড শেষে এদিন রাকাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বদরুল মিল্লাত।
আবেদনে বলা হয়, আসামিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তার নাম ঠিকানাও বাছাই করা হচ্ছে। আসামির প্রায় সব আত্মীয়-স্বজন বর্তমানে প্রবাসে অবস্থান করছে মর্মে জানা গেছে। জামিনে মুক্ত হলে এ আসামি স্থায়ীভাবে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।
আসামিদের পক্ষে বিএনপি দলীয় আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের আবেদন করে বলেন, ‘রাকাকে জেলে রাখার কোনো কারণ নেই। পুলিশ বলছে, মুক্তি পেলে তিনি বিদেশ চলে যাবেন। কিন্তু তিনি কেমনে যাবেন বিদেশে। তার পাসপোর্ট তো আগেই জব্দ করা হয়েছে। গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর রাকা জানতে পারেন তার নামে একটি ফেক আইডি খোলা হয়েছে। গত ১ অক্টোবর তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় এ বিষয়ে একটি জিডি করেন। পরে পুলিশই আবার তাকে গ্রেপ্তার করেন। সাংবাদিক কনক সারোয়ার তার ভাই। বিদেশে সরকার নিয়ে আলোচনা করেন। এ জন্যই রাকাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভাই অপরাধ করলে বোনকে সাজা দিতে হবে কেন? এটা হতে পারে না। মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার কারণে গত ৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরায় অভিযান চালিয়ে রাকাকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। গ্রেপ্তারের সময় তার বাসা থেকে একটি মুঠোফোন, একটি পাসপোর্ট ও আইস নামের মাদক জব্দ করা হয়। এরপর রাকার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি এবং মাদক আইনে আরেকটি মামলা করে র্যাব।
র্যাব জানায়, বিদেশে অবস্থানকারী একটি চক্র দেশে থাকা এজেন্টদের যোগসাজশে ভার্চুয়ালি রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে, এমন বিষয় র্যাবের গোয়েন্দা নজরে আসার পর তাদের ধরতে সক্রিয় হয় তারা। সাংবাদিক কনক সরোয়ারকে সাহায্য করতে এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রাকা।