জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী হাফ ভাড়া দিতে গিয়ে হেনস্তার ঘটনায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত ‘ইতিহাস পরিবহনের’ বাস আটক করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাবি শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সেই সঙ্গে ইতিহাস পরিবহন কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটে মিরপুর টু চন্দ্রাগামী ইতিহাস পরিবহন সার্ভিসের সব বাস আটকে দিয়ে প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত সাধারণ শিক্ষার্থী। দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইতিহাস পরিবহনের বাসগুলো আটকাতে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুই বান্ধবীসহ দুপুরে ক্যাম্পাস থেকে মিরপুর যাওয়ার পথে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফোরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ৪৮তম ব্যাচের এক নারী শিক্ষার্থী হেনস্থার শিকার হন। এ সময় পথে ইতিহাস বাসের কন্ডাক্টরের সঙ্গে হাফ ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় তাদের। সঙ্গে দুজন মিরপুর-২ ও মিরপুর ১০ এ নেমে যায়। এরপর বাস মিরপুর-১৩ গেলে বাসচালক সবাইকে নেমে যেতে বলে। ওই শিক্ষার্থী বাসের পেছনের দিকে বসায় সবার শেষে নামতে গেলে কন্ডাক্টর বাসের দরজা লাগিয়ে দেন। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ৯৯৯ এ কল দেওয়ার চেষ্টা করলে এবং কাফরুল থানায় বড় ভাই আছে জানালে তারা দরজা খুলে দেয়। নেমে যাওয়ার পর পরই বা দ্রুত গতিতে ওই স্থান ত্যাগ করেন।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, দুই বান্ধবীসহ ইতিহাস পরিবহনের বাসে মিরপুর যাওয়ার পথে কন্ট্রাক্টর ভাড়া চাইলে হাফ ভাড়া দেই। কিন্তু উনি ফুল ভাড়া দাবি করেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। বাস মিরপুর ১৩ তে গেলে বাসচালক সবাইকে নেমে যেতে বলে। বাসের পেছনের দিকে বসায় সবার শেষে নামতে গেলে কন্ডাক্টর রাস্তা আটকে দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। কাফরুল থানায় বড়ভাই আছে বললে উনি দরজা খুলে নামতে দেয় কিন্তু নামার আগেই বাস টান দিয়ে এত জোরে চলে যায় যে বাসের নম্বরও দেখতে পারিনি।
এ বিষয়ে বাস আটককারী স্নাতকোত্তর পর্বের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শুধু ইতিহাস বাস নয়, সব বাসেই হেল্পার চালকের ব্যবহার খারাপ। আর গতকালের ঘটনা কোনো সামান্য বিষয় নয়। এটার যথাযথ বিচার হওয়া দরকার। আমাদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার কোনো ইচ্ছে নেই। তাই আমরা এই রুটের সব বাস চলাচল নিশ্চিত রেখে, শুধুমাত্র ইতিহাস পরিবহনের বাসগুলোকে আটকে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ওই বাসের কর্তৃপক্ষ লিখিত দিয়েছেন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা করবেন। শিক্ষার্থীদের অন্যান্য যেসব দাবি ছিল (হাফ ভাড়া, হয়রানি বন্ধ) সেগুলোও মেনি নিয়েছেন। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে বাসগুলো ছেড়ে দেবে শিক্ষার্থীরা।’