সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষক প্রতিনিধিরা খাবার নিয়ে গেলে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে আলোচনার অপেক্ষায় আছেন। সোমবার দুপুর ১টায় প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন শাবিপ্রবি’র আন্দোলনকারীরা।
এসময় আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রী বা তার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত,তবে তারা ভাঙবেন না। অনশন কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমাদের বলা হয়েছিলো অনশন ভেঙে আলোচনায় বসতে, কিন্তু আমরা অনশন ভাঙবো না। এই অবস্থায় আলোচনা করতে চাই।
ব্রিফিংয়ে আন্দোলনকারীরা আরও জানান, অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা সময় সময় খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে। হাসপাতালে মোট ১৯ জন ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ৪ জনের শারীরিক অবস্থা একটু ভালো হয়ে যাওয়ায় হাসপাতাল থেকে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আনশনে যোগ দিয়েছেন। হাসপাতালে যারা আছেন তারাও কিন্তু অনশন পালন করছেন। এখন অনশনে আছেন মোট ২৩ জন আর এই মুহুর্তে (সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত) ক্যাম্পাসে অনশন করছেন ১৩ জন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অনেক পত্রিকায় লেখা হচ্ছে- আমরা ভিসি’ বাসভবনের পানি, গ্যাস ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। আসলে তথ্যটি ঠিক নয়, আমরা শুধু বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
শাবিপ্রবি’র উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত বুধবার থেকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসলেও একজনের বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি বাড়ি চলে যান। পরে শনিবার ও রবিবার আগের ২৩ জনের সঙ্গে আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।
শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু হয় ১৩ জানুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে। ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি বিকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সে দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন নামেন।