ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী-অধ্যুষিত দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার হঠাৎ এই ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করে বড়সড় নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা।
স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দীর্ঘ সময়ের এই বক্তব্যের একপর্যায়ে ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন দুটি অঞ্চল দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানান পুতিন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেন কখনোই স্থিতিশীল ছিল না। অঞ্চল দুটিকে স্বীকৃতি দিতে ডিক্রি জারির বিষয়ে ইতোমধ্যেই জার্মান চ্যান্সেলর ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে টেলিফোনে জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পুতিন।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন অধিকৃত অঞ্চল দোনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল দুটিই নয় ঐতিহাসিকভাবে পুরো ইউক্রেনই ছিল রাশিয়ার। এটি চরম সত্য। রাশিয়া নয় বরং ন্যাটো, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা আমাদের সঙ্গে কথার বরখেলাপ করেছেন। অবিলম্বে ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার করে নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। তা নাহলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য ইউক্রেনই দায়ী থাকবে।
রুশ প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। তারা বলছেন, বিচ্ছিন্ন অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পরোক্ষভাবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধেরই আভাস দিলেন। অবিলম্বে এই ঘোষণা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
পুতিনের ওই ঘোষণার পর জরুরি বৈঠকে বসেন ইইউ ও ন্যাটো সদস্যরা। পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ইইউ কাউন্সিল প্রধান চার্লস মিশেল। তবে সেটি কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এদিকে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর যুদ্ধের আশঙ্কায় দোনেস্ক ও লুহানস্ক ছাড়তে শুরু করেছেন ইউক্রেনের সাধারণ বাসিন্দারা। পুতিনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কিয়েভের বাসিন্দারা বলছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের পাঁয়তারা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে মস্কোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রুশ নাগিরকরা।