বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার প্রসূতি ওয়ার্ডের টয়লেটে প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করার সময় নবজাতক প্রসব হয়ে প্যানের মধ্য থেকে পাইপে আটকে যায়।
প্রথমে গুরুত্ব দেননি ওয়ার্ডের ডাক্তাররা, স্যানিটারি ব্যবস্থা আধুনিকায়নের উদ্যোগে।
২ ঘণ্টা পর অন্য রোগীদের সহায়তায় পাইপ ভেঙে ওই নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক মেয়ে উভয়েই সুস্থ আছে।
গতকাল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
টয়লেটের পাইপে ২ ঘণ্টা আটকে থাকা নবজাতককে জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় শের-ই বাংলা মেডিকেলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ওই নবজাতক পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীর শিল্পী বেগম (২৭) ও মো. নেয়ামত উল্লাহ দম্পত্তির দ্বিতীয় কন্যা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিল্পীকে গত শনিবার সকালে শের-ই বাংলা মেডিকেলের তৃতীয় তলার প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক তাকে স্বাভাবিক প্রসবের পাশাপাশি সিজারিয়ান অপারেশনের জন্যও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন।
এ ঘটনাকে অলৌকিক হিসেবে দেখছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে কৌতুহলী মানুষ নবজাতক শিশুটিকে দেখতে ওয়ার্ডে ভিড় করেন।
হাসপাতালের নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিটের (স্ক্যানু) প্রধান ডা. এমআর তালুকদার মুজিব জানান, এটা একটা এক্সিডেন্টাল ডেলিভারি হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে প্রিসিভিটাস ডেলিভারি (হঠাৎ বা অপ্রত্যাশিতভাবে ডেলিভারি) বলে। যেভাবে ডেলিভারি হয়েছে তাতে খারাপ কিছু হওয়ার আশঙ্কা ছিল। নবজাতক শিশুটি এখন সুস্থ আছে। তার শরীরের রং ভালো, এক্টিভিটি ভালো, ফিডিংয়েরও আগ্রহ আছে। স্ক্যানু ইউনিটে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এদিকে টয়লেটের প্যানে নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়া এবং প্যানের মধ্য থেকে পাইপে গিয়ে আটকে পড়ার বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছে। হাসপাতালের টয়লেট-বাথরুমগুলো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। ওই টয়লেটে প্যানের স্থানে কমোড থাকলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না। ওই দুর্ঘটনার পর হাসপাতালের পূর্তব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের ৪ জন প্রকৌশলী সরেজমিন পুরনো টয়লেট-বাথরুমের পরিস্থিতি দেখে গেছেন। হাসপাতালের স্যানিটারি ব্যবস্থা শিগগিরই আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।