fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িআন্তর্জাতিকবাংলাদেশে বিনিয়োগে বড় বাধা দুর্নীতি

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বড় বাধা দুর্নীতি

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। ঘুষ, আত্মসাৎসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার নানা আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। সমাজের প্রায় সব স্তরেই দুর্নীতি আছে বলে ব্যাপকভাবে অনুমান করা হয়, যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত ও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে এমনটাই মনে করেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে এ বছরের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে নিয়মিত এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ হলো শ্রম আইনের শিথিল প্রয়োগ, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও সীমিত অর্থায়নের সুযোগ। তবে কিছু ক্ষেত্রে এসব সীমাবদ্ধতার উন্নতি হচ্ছে। এর মধ্যে আছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতিতে সরকারের প্রচেষ্টা দেখা গেছে, কিন্তু বাস্তবায়নে ঘাটতি আছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও এ দেশে কিছু ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সুযোগ বিনষ্ট করছে। প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজানের সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, উগ্রবাদীদের এমন ধরনের হামলা উদ্বেগ তৈরি করেছে। তবে এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির সক্ষমতাকে প্রকাশ করছে। তারপরও বিনিয়োগ পরিবেশে ঘাটতি আছে। যেমন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোতে ঘাটতি আছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, জমিসংক্রান্ত বিরোধও বিনিয়োগের বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীসহ খোদ বাংলাদেশের নাগরিকেরাই প্রতারণামূলকভাবে জমি বেচাকেনার অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া এ দেশের অর্থনীতির অন্যতম দুর্বলতা হলো দুর্বল আর্থিক খাত। এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ধারাবাহিক লোকসান এবং আমলাদের বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত ব্যবসার পরিবেশের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থায় আরও কাজ করতে হবে। এ ছাড়া আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা বাংলাদেশে বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে। প্রশাসনিক কাজের দ্বৈততা, আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব বিনিয়োগকারীদের এ দেশে প্রকল্পের উদ্যোগ নিতে নিরুৎসাহিত করে। এ ছাড়া রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় হুমকি–ধমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ এ দেশে প্রায়ই ঘটে থাকে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য নয়টি খাতকে বিপুল সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এগুলো হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি যন্ত্রপাতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি), অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রকৌশল সেবা, বস্ত্র ও পোশাক প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ও সেবা, শিক্ষা, ই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ। বাংলাদেশের নিম্ন মজুরি হার তৈরি পোশাক খাতকে সম্প্রসারণে সহায়তা করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২৩৫ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ৫৯৫ কোটি ডলারের পণ্য। বাণিজ্যঘাটতি বাংলাদেশের পক্ষে আছে। এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের পরিমাণ ৪১০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments