ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রহলে ‘র্যাগিংয়ের’ ঘটনা সমাধান করতে যাওয়া এক সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।শাহজালাল হলে শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান।
এ বিষয়ে হলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন বলেও অভিযোগ উঠেছে।তবে শাহজালাল হলে র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে ওই হলের প্রভোস্ট মো. কামরুল হাছানের দাবি।
নাম গোপন করে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কয়েকদিন আগে শাহজালাল হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে র্যাগিং করেন ওই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি সুরাহা করতে শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর কয়েকজন স্বজন ও সহকারী প্রক্টর মো. রিজওয়ানুল হক কনক হলে যান।এ সময় হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কামরুল হাছান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে প্রভোস্ট কার্যালয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ওই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন প্রভোস্ট ও সহকারী প্রক্টর। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ মহির উদ্দীন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি হলে গিয়ে সহকারী প্রক্টর ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পর সহকারী প্রক্টর রিজওয়ানুল হক কনক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মরত তিনজন সাংবাদিক হামলার শিকার হন।এই তিন সাংবাদিক হলেন ঢাকাপোস্ট-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর, দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার ইফতেখারুল ইসলাম সৈকত এবং ক্যাম্পাস লাইভ ২৪ ডট কম প্রতিনিধি রায়হান আবিদ।
পরে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই হলের ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল শাকিলকে বিষয়টি সুরাহার দায়িত্ব দেন।এরপর নাজমুল শাকিল এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রাকিবুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ হামলার কী ব্যবস্থা নেয় সেটা দেখার বিষয়। লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যায় এর আগে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। দোষীরা শাস্তির আওতায় না আসায় প্রশাসনের রহস্যময় নীরব ভূমিকার কারণে প্রতিনিয়ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বেড়েই চলেছে।