বরিস জনসনকে যখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদ থেকে সরে যেতে হবে, তখন তার জায়গায় যিনি আসবেন তাকে নির্বাচনের জন্য কোনও সাধারণ ভোট হবে না। এর পরিবর্তে তার নিজের রাজনৈতিক দলের প্রায় ১,৬০,০০০ সদস্য তার উত্তরসূরী নির্বাচন করবেন।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে, গত সাধারণ নির্বাচনে যেখানে ৪০ লক্ষ ৭০ হাজার ভোটার নিবন্ধিত ছিলেন, সেখানে এত কম সংখ্যক লোক কীভাবে দেশের একজন নেতা নির্বাচন করতে পারেন? এর জবাব লুকিয়ে রয়েছে ব্রিটেনের অনন্য এক রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে। যার অর্থ, এবার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে শুধুমাত্র তারাই ভোট দেবেন যারা কনজারভেটিভ পার্টির চাঁদা দানকারী সদস্য।কিন্তু ব্যাপারটি এবারই প্রথমবার নয়। কখনও কখনও এর চেয়েও কম লোক নতুন নেতা বেছে নিয়েছেন।
ব্রিটেনে যখন কোন প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদকালের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা করেন তখন কোন সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হয় না।বর্তমানে কনজারভেটিভ পার্টির সাধারণ সদস্যরা বিজয়ী প্রার্থী নির্ধারণের জন্য একটি ব্যালটে অংশ নেন।কিন্তু টোরি দলের এই প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার সদস্য ব্রিটেনের মোট ভোটার সংখ্যার মাত্র ০.৩%।এই প্রক্রিয়াটি কতখানি ন্যায্য অতীতে তা নিয়ে বহুবার অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে কেবল তার নিজস্ব রাজনৈতিক দল এবং এর সংশ্লিষ্ট সমর্থকরাই নির্বাচিত করবেন, এটা মোটামুটি সাধারণ প্রথা।গত অর্ধ শতাব্দী ধরে দেশের প্রায় অর্ধেক নেতা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে, জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণের ভোটের মাধ্যমে নয়।এর আংশিক কারণ হচ্ছে, ব্রিটিশ রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুটি সাধারণ নির্বাচনের মধ্যবর্তী সময়ে জনপ্রিয়তা কমে গেলে সরকার প্রধান তার নিজের দলের মাধ্যমে অপসারণের ঝুঁকিতে পড়েন। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সম্পূর্ণ উল্টো।
আশ্চর্যজনকভাবে, অতীতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বাছাই করেছেন এমন লোকের সংখ্যা ছিল আরও কম।এই নির্বাচন প্রক্রিয়া এমনকি সবসময় গণতান্ত্রিক ব্যাপারও ছিল না। কনজারভেটিভরা ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য এমপিদের মধ্যে কোন নির্বাচনও করেনি। প্রার্থীদের একটি গ্রুপের মধ্য থেকে একজন বিজয়ী ‘আবির্ভূত’ হবেন বলেই ধরে নেয়া হতো।দলের সিনিয়র সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেন যে কে হবেন সবচেয়ে উপযুক্ত নেতা এবং শেষ পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক ভোট ছাড়াই একজনকে নির্বাচিত করা হতো।