fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়কূটনীতিতিন বিষয়ে নিশ্চয়তা চাইবে ঢাকা-দিল্লি

তিন বিষয়ে নিশ্চয়তা চাইবে ঢাকা-দিল্লি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি এসে পৌঁছেছেন। তার এই সফরের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার বাণিজ্যসংক্রান্ত চুক্তি ছাড়াও কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। তবে চুক্তি ও সমঝোতা সংক্রান্ত নির্ধারিত এজেন্ডা যাই থাক, এর বাইরেও অনেক বিষয় আলোচনা হবে।

দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও নিরাপত্তা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এবং জ্বালানি ইস্যু মূল আলোচ্য বিষয় হতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। দুই প্রধানমন্ত্রী এই তিন বিষয়ে একে-অপরের কাছে নিশ্চয়তা চাইতে পারেন।

সূত্রগুলো মনে করছে, আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে বৈঠক হওয়ার কথা, তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৯ সালের অক্টোবরে দিল্লি সফরের পর গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনে গিয়ে সেখানে একান্ত বৈঠক করেছিলেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। ওই বৈঠকের পর কেটে গেছে এক বছর। পরে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় এলেও দ্বিপাক্ষিক অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সামনে আসেনি। এবার জাতিসংঘের অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদির যোগ দেওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। তার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাই এই সফর ছাড়া আগামীতে দুই প্রধানমন্ত্রীর দেখা হওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আজকের বৈঠকেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা শেষ করতে চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব মুখোমুখি হয়েছে জ্বালানি সংকটের,যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ওপরও। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরও জ্বালানি সংকটের কারণে লোডশেডিংয়ের মতো সিদ্ধান্তে যেতে হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারকে। তাই এ সংকট মোকাবিলায় ভারতের সহযোগিতা চাইতে পারে বাংলাদেশ।

মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আর কতদিন টানবে বাংলাদেশ-এমন প্রশ্ন এখন সারা দেশের মানুষের। বাস্তুহারা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানা সংকট সৃষ্টির চেষ্টাও করছে। এদিকে গত এক মাসে অন্তত তিন দফায় মিয়ানমারের মর্টার শেল ও গোলা এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভেতর। বিষয়টিতে উদ্বেগ জানিয়ে কড়া প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আজকের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে ভারতের জোরালো ভূমিকা আশা করবে বাংলাদেশ।

প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকায় সতর্ক ভারত। গত কয়েক বছরে দেশ দুটি সীমান্তে একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছে। তাই ভারত আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইতে পারে। দেশটি বাংলাদেশে যৌথ সামরিক কারখানা করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় দিল্লি। আজকের দুই নেতার একান্ত বৈঠকে বিষয়টিও আলোচনায় উঠতে পারে।

একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে যৌথ সামরিক কারখানা করতে চায় ভারত। সামরিক সহযোগিতা ও সরঞ্জাম সহায়তার বাইরে বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদিত সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধাস্ত্র এখান থেকে ভারতে রপ্তানি হবে। এর মাধ্যমে সামরিক সহযোগিতার বাইরে দুই দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা কমাতে চায় দিল্লি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী দিল্লির গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, ‘সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে, এমনকি সর্বোচ্চ পর্যায়েও বেশ ঘন ঘন বৈঠক হয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে খুবই শক্তিশালী করে তুলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ, এই সম্পর্কটা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।’

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments