সরকারকে বেসরকারি খাতের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন।তিনি বলেন, ২০৩১ ও ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে হলে অবকাঠামো খাতে ব্যাপক পরিবর্তন করতে হবে। উৎপাদনের গতি আনতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গতি দ্বিগুন করা ও চট্টগ্রাম বন্দরের টেস্টিং সুবিধা বাড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
এছাড়াও সরকারি শিল্প কারখানায় হাজার হাজার একর অব্যবহৃত জমিতে শিল্প স্থাপন ও সরকারি কারখানার আধুনিকায়নে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মডেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন সভাপতি। তিনি বলেন, দেশের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তাদের সরকারের প্রকল্প অংশীদার করলে অর্থায়ন সহজ হবে। সরকারের চাপ কমবে।২৯ অক্টোবর এফবিসিসিসিআই আয়োজিত ভিশন-২০৪১ অর্জনে পিপিপির ভূমিকা ভিশন-২০৪১ অর্জনে পিপিপির ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকাল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
অনুষ্ঠানে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, সরকারের বিভাগগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পার্টনার হিসেবে গ্রহণ করছে না। তারা বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের কন্ট্রাক্টর হিসেবে মনে করেন। এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।তিনি আরও বলেন, পিপিপির উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা আস্থাহীনতা। এটা দূর করতে সরকারের প্রতি বেসরকারি খাতকে অংশীদার হিসেবে দেখার মনোভাব তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফরেইন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়। তিনি বলেন, ভিশন ২০৪১ অর্জনে অবকাঠামো ও লজিস্টিকসের ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু এখাতে সরকারি বিনিয়োগ অপর্যাপ্ত।তিনি বলেন, অবকাঠামো খাতে সরকারি অর্থায়নের বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী ২০৩৭ সাল নাগাদ এ খাতে ১৯২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি তৈরি হবে। পিপিপির মাধ্যমে অর্থায়নে এ ঘাটতি দূর করা সম্ভব বলে মনে করেন ফিকি সভাপতি। পিপিপির মাধ্যমে ২০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে বলে জানানো হয় মূল প্রবন্ধে।প্যানেল আলোচনায় এফবিসিসিআইর পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, পিপিপি সফল হতে হলে প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় হতে হবে।সরকারের অনেক নীতির কারণে পিপিপিতে আসতে বাইরের কোম্পানিগুলো নিরুৎসাহিত হচ্ছে বলে মনে করেন এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক।
পিপিপির জন্য বাজেটের আলোকে একটি জাতীয় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের পরামর্শ দেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ উপদেষ্টা মোহাম্মদ হাসান হায়দার এফসিসিএ বলেন, জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি, মিউনিসিপ্যালিটি পর্যায়ের প্রকল্পগুলোতেও পিপিপি কার্যকর করা দরকার।