আজ শুরু হচ্ছে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ। প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ সার্বিয়া। আজ রাত ১টায় ইউরোপীয় এ প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হবে তারা। এবার কাতারে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। আর্জেন্টিনার বুজুর্গ সমর্থকরা যখন ব্রাজিলকে টপ ফেভারিট বলেন, তখন ব্রাজিলের বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে রাখেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে! ধন্দে ফেলে দেওয়ার মতো ব্যাপার। দুই প্রতিবেশী ও প্রতিদ্বন্দ্বীর হঠাৎ গভীর হয়ে গেল পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ! আবার পরশু রাতে আর্জেন্টিনার হারার পর ব্রাজিলের সমর্থকরাও বেশ চাপে পড়ে গেছে। পুঁচকে সৌদি আরব পারলে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষ সার্বিয়ারও ধাক্কা দেওয়ার সামর্থ্য আছে ব্রাজিলকে।
মনের ভয় বড় সাংঘাতিক। এটার আগ্রাসনে পড়লে আপনার বিশ্বাস ও সামর্থ্য সব গুলিয়ে যাবে। অনেক সমর্থকের সেটা গুলিয়ে গেলেও তার প্রভাব পড়েনি ব্রাজিল দলে। তারা বিশ্বাস করে, অঘটন বারবার ঘটে না। নেইমারের দুর্দান্ত ফর্ম ও তারুণ্যের মহাজাগরণে লুসাইল স্টেডিয়ামে সেলেসাওদের বিশ্বকাপ শুরু হবে হেক্সা জয়ের বার্তা দিয়ে। এখানে চাপ আছে, আনন্দ আছে। তাই তিতে মুখ ফুটে শিরোপার কথা বলে যেন বাড়তি চাপ অনুভব করতে চাননি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলতেই হয়েছে, ‘চাপ সব সময় আছে। তবে চাপটা হলো পুরো দেশ আমাদের সঙ্গে আছে, আমাদের ভালোবাসে। আমরা স্বপ্ন দেখি; কিন্তু একটি দলই চ্যাম্পিয়ন হবে। তাই চাপ কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না। ’
তাদের সর্বশেষ বিশ্বজয়ের ঘটনা ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে। ২০ বছর বাদে বিশ্বকাপ ফিরেছে এবার ফিরেছে সেই এশিয়ায়। এর পরও অনেকের মন খচ খচ করে সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ডের গ্রুপ বলে। ইউরোপীয় বলেই ভয়। গত চার আসরে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল সেলেসাওরা। ২০০৬ সালে হারে জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সের কাছে, চার বছর পর অরিয়েন রোবেনের নেদারল্যান্ডসের কাছে। ২০১৪ সালে নিজেদের মাঠে জার্মানির কাছে লজ্জাকর হারে শোকস্তব্ধ হয়েছিল পুরো ব্রাজিল। নতুন উদ্যমে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তারা বিদায় নেয় রবার্তো মার্তিনেজের ‘ট্যাকটিক্যাল মাস্টার ক্লাসে’।বেলজিয়ামের কাছে সেই হারের রাতটা এখনো ভুলতে পারেননি তিতে। সারা ম্যাচ খেলল ব্রাজিল, থিবো কর্তোয়া প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ঠেকিয়ে দিল সব শট। এরপর রবার্তো মার্তিনেজের ‘’ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার তিতের। সারা রাত নির্ঘুম কাটিয়ে নিজের ভুলটা নিশ্চিতভাবে ধরতে পেরেছিলেন তিতে। এর পর থেকে উঠে পড়ে লাগেন মধ্যমাঠ নিয়ে। আসল খেলাটা তৈরি হয় ওখানে, তাই ব্রাজিল কোচের নজর মাঝমাঠের ভারসাম্যের ওপর, ‘আমাদের গোল করার রেকর্ড খুব ভালো। বাছাই পর্বে ২৯ ম্যাচের ২২টি কোনো গোল খাইনি আমরা। আক্রমণভাগ কিংবা রক্ষণভাগ ঠিক থাকলেই হয় না। দলের ভারসাম্যের জায়গা হলো মধ্যমাঠ, ওখানে গতি থাকলে বুঝতে হবে দলের ভারসাম্য আছে। ’ এই ভারসাম্যপূর্ণ দলটি নিয়ে কোচ কিছুই বলতে চাননি। সাংবাদিকরা বিভিন্নভাবে খুঁচিয়ে কিছু বের করতে পারেননি, ‘দলের কথা আমি কখনো বলব না। এটা ফলাও করে জানিয়ে আমি প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিতে চাই না। একাদশে কেউ থাকবে, কেউ বাইরে থাকবে। যারা বিভিন্ন ক্লাব দলে বেশ দাপটের সঙ্গেই খেলে তারাই থাকবে দলে। ’