দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নয়টি দেশের ৪০টিরও বেশি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন রাজস্ব দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ফর টেরোরিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান ই. নেলসন বলেছেন, দুর্নীতিবাজ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী উভয়ই তাদের কর্মকাণ্ড সম্পাদনে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোর ওপর নির্ভর করে। এ ধরনের লোকদের জঘন্য আচরণ প্রকাশ করার মাধ্যমে আমরা তাদের কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে, নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে দিতে এবং সম্পদের অভাবে ফেলতে পারি।
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলো উত্তর কোরিয়া, এল সালভাদর, গুয়েতেমালা, গিনি, ইরান, মালি, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও চীনের।
উত্তর কোরিয়ায় নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে স্টেট সিকিউরিটি বর্ডার গার্ড জেনারেল ব্যুরো বিজিজিবি মন্ত্রণালয়, সরকার পরিচালিত অ্যানিমেশন স্টুডিও এসইকে’র প্যারিসভিত্তিক প্রতিনিধি কিম মিয়ং চোল, এভারলাস্টিং এম্পায়ার লিমিটেড, তিয়ান ফাং (হংকং) হোল্ডিংস লিমিটেড, ইয়ানচেং থ্রি লাইন ওয়ান পয়েন্ট অ্যানিমেশন কোং, লিমিটেড, কোয়ানঝো ইয়াংজিন ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট ট্রেড কোং লিমিটেড, এবং ফুজিয়ান নানান ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন।
দুর্নীতির অভিযোগ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্টের সাবেক আইনি সচিব কোনান টোনাথিউ কাস্ত্রো রামিরেজ এবং শ্রমমন্ত্রী অস্কার রোল্যান্ডো কাস্ত্রোর ওপর।
একই অভিযোগে নিসেধাজ্ঞা পেয়েছেন গুয়েতেমালার কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট অ্যালান এস্তুয়ার্দো রদ্রিগেজ রেয়েস (রদ্রিগেজ) এবং সংসদ সদস্য জর্জ এস্তুয়ার্দো ভার্গাস মোরালেস এবং সাবেক জ্বালানি মন্ত্রী লুইস আলফোনসো চ্যাং নাভারো। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে গিনির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলফা কোনডের বিরুদ্ধে।
সাম্প্রতিক হিজাববিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে ইরান। শুক্রবার দেশটির ল এনফোর্সমেন্ট ফোর্স বা জাতীয় পুলিশের কেরমানশাহ প্রদেশের কমান্ডার আলী আকবর জাভিদা, শাভারের পুলিশ কমান্ডার ইব্রাহিম কোকেকজ এবং রেজাই শাহর কারাগারের ওয়ার্ডেন আল্লাহ করম আজিজির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন আগ্রাসনের পরিকল্পনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল প্রশাসনের কর্মকর্তা ওলেগ ইউরিভিচ নেস্টেরভ ও এভজেনি রেডিওনোভিচ কিম, দোনেৎস্কে রুশ বাহিনী অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করায় রুশ নাগরিক মেরিনা কনস্টান্টিনোভনা স্রেদা ও রুশপন্থি দোনেৎস্ক প্রশাসনের কর্মকর্তা আলেক্সি ভ্যালেন্টিনোভিচ মুরাতভের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউক্রেনে বিতর্কিত গণভোটের আয়োজনে জড়িত থাকার অভিযোগে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান-উপপ্রধানসহ ১৫ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত তিব্বতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে চীনা কর্মকর্তাদের ওপরও। এ তালিকায় রয়েছেন টিএআর পার্টির সাবেক সেক্রেটারি উ ইংজি এবং তিব্বত জননিরাপত্তা ব্যুরোর টিপিএসবি সাবেক পরিচালক ঝাং হংবো।
নিষেধাজ্ঞার ফলে তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের সঙ্গে মার্কিন নাগরিকদের আর্থিক লেনদেনও নিষিদ্ধ থাকবে।