অন্তর্বর্তী সরকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে ভারতের গণমাধ্যম ও সেখানকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। তারা বলেছে, সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা ও অন্তর্বর্তী সরকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলাই ভারতীয় গণমাধ্যমের লক্ষ্য।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের পক্ষে সংগঠনটির সম্পাদক ফয়জুল হাকিম ও জাতীয় পরিষদ সদস্য মুঈনুদ্দীন আহমেদ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। পরে মুক্তি কাউন্সিল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এসব কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যৌথ সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির হামলার ঘটনা ও এর আগে কলকাতায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনে পরিকল্পিতভাবে সহিংস হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননা বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা।
যৌথ সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হাসিনা-মনমোহন চুক্তি ২০১০, হাসিনা-মোদি চুক্তি ২০১৫, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সামরিক চুক্তি ২০১৭ সহ সব অসম ও অধীনতামূলক চুক্তি প্রকাশ এবং বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের নেতারা। তাঁরা বলেন, ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তা বাঁধসহ অভিন্ন আন্তর্জাতিক ৫৪টি নদীতে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনমত গড়ে তুলতে হবে। ভারতকে বাধ্য করতে হবে পানি আগ্রাসন নীতি থেকে সরে আসতে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সভায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতের বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ উত্থাপনের কথা বলেন মুক্তি কাউন্সিলের নেতারা। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত রাষ্ট্রের আগ্রাসন নীতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রচার–প্রচারণার উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে।