ডাকাতি করে পালানোর সময় স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়া পুলিশের এএসআইসহ আসামীদের বিভিন্নভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যাক্তিদের অভিযোগ, ক্ষোভ প্রকাশ ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ দাবী।
চট্রগ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফারুক মিয়াসহ ৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। নগরীর বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকার একটি বাসায় ঢুকে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়েন তারা। ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই ফারুককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত এই ৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো ৬ জন হলেন, বাকলিয়া থানার চাক্তাই পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফারুক মিয়া, তার সহযোগী জয়নাল আবেদীন, মো.আকবর, ফজলুল করিম, মিজানুর রহমান ও সোহেল রানা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রশিকিউশন) মফিজুর রহমান ৬ আসামীকে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করলেও ডাকাতির ঘটনার বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
এদিকে বাকলিয়া থানার পুলিশের, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৬ আসামিকে পাঠানো নথিতে উল্লেখ করা হয়, বাকলিয়া থানার জিডি মূলে ৬ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয় ডাকাতি হওয়া ভুক্তভোগী ওই বাসার ভাড়াটের মামলা করতে দেরি হওয়া। ভুক্তভোগী নিয়মিত মামলা করলে পরে তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
নগরের বাকলিয়া থানা পরিদর্শক রফিকুল ইসলামের সই করা সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে নগরের বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকার একটি ভবনের ৯ তলার একটি বাসায় ১৬ জনের একটি দল ডাকাতি করতে যায়। তারা ৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩৫ হাজার টাকা লুট করে। সে সময় আশপাশের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে ডাকাত দলকে ধাওয়া করে ও পালিয়ে যাওয়ার সময় এএসআই ফারুকসহ ৬ জনকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ এসে ৬ জনকে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় আশপাশের লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ডাকাতি ঘটনার সময় তারা চিৎকার, চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে ডাকাতির ঘটনা ঘটা ওই বাড়ীর দিকে এগিয়ে গেলে কিছু লোককে দোড় দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখে তাদের পিছু ধাওয়া করে ওই ৬ জনকে ধরে ফেলে। বাকী অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পরে তারা ধৃত ৬ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আসামীদের হাতেনাতে ধরা হলেও ডাকাতি মামলায় না দেখিয়ে সাধারণ ডাইরী মূলে আদালতে পাঠানোর কারণে শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে আপোষ প্রচেষ্টা, ডাকাতির সাথে জড়িত আসামীদের মধ্যে পুলিশের সদস্য থাকায় তাদের বাঁচানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি অভিযোগ তোলেন। একইসাথে এবিষয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করে দোষীদের আইন-আমলে এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের দাবীও জানান তারা।
ডাকাতির এই ঘটনা ও স্থানীয় লোকজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওই ভূক্তভোগী ব্যাক্তির সাথে কথা বলতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।