সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার বিচার কাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশ পেয়ে সোমবার মামলার বিচারকাজ স্থগিত করেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার।
ছয় মাসের স্থগিতাদেশ শেষে আগামী বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি ফের মামলাটির বিচারকাজ শুরুর ঘোষণা দেন আদালত।
এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল হক বাবু জানান, মামলাটি ছয় মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ উচ্চ আদালত থেকে নিয়ে আসে আসামিপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
তিনি আরও জানান, বাদীপক্ষ এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি রয়েছে। সেখানে আপিল বিভাগ মামলাটির স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আদেশ দিলে আবারও রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেই মামলাটি চালু হবে।
গত ১ সেপ্টেম্বর চতুর্থ দফায় সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলাটির চার্জগঠন পেছানো হয়। সে বার আসামিপক্ষ উচ্চ আদালত থেকে মামলাটির কার্যক্রম ছয় মাস স্থগিতের আদেশ নিয়ে আসে। তবে তারা রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাইকোর্টের আদেশের সার্টিফাইড কোনো কপি জমা দিতে পারেনি। শুধু তাদের আইনজীবীর সার্টিফিকেট কপি জমা দেয়ায় রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চার্জগঠন বন্ধ রেখে ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সার্টিফাইড কপি জমা দেয়ার আদেশ জারি করেন। এর আগে মোট তিন দফা পেছানো হয় চার্জ গঠনের দিন।
এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, মামলাটির বিচার কাজ বিলম্বিত করতে আসামিপক্ষ নানা অপকৌশল প্রয়োগ করছে। এর ফলে বাদীপক্ষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর শর্টগানের গুলিতে গুরুতর আহত হন দৈনিক সমকালের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন বাদী হয়ে মেয়র মিরুকে প্রধান আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ একই বছরের ২ মে মেয়র মিরু, তার ভাই মিন্টুসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে মেয়র মিরু কারাগারে আছেন। তবে অপর ৩৭ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তরের জন্য গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস পর গত ১৪ জুলাই প্রজ্ঞাপনটি সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পৌঁছে। এরপর বহুল আলোচিত মামলাটি রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে।