দুর্নীতির দায়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া ওমর ফারুক চৌধুরীকে যে কোনো সময় আটক করা হতে পারে। তার বাসা ও গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ক্যাসিনোবাণিজ্য, দুর্নীতি ও টাকার বিনিময়ে যুবলীগে পদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।
রবিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব ও পুলিশ। এরপর থেকেই যুবলীগের চেয়ারম্যানকে নজরদারিতে রাখা হয়। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গ্রিন সিগন্যাল না থাকায় তাকে আটকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রবিবার গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে যুবলীগের বৈঠকে ওমর ফারুককে পদে থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেন, ‘যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে চেয়ারম্যানকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া যুবলীগে থাকতে বয়সসীমা ৫৫ বছর করা হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘বৈঠকে সংগঠনটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার চয়ন ইসলামকে আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদকে সদস্য সচিব ও কার্যনিবাহী সদস্যকে নিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এই কমিটি আগামী সম্মেলন পর্যন্ত সম্মেলনের প্রস্তুতি নেবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের সবাইকে অব্যাহতি দিতে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশ রয়েছে।’
অব্যাহতির ঘোষণার পর ওমর ফারুককে রেকি করে নজরদারি বাড়ানো হয়। বাসার আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোষাকে অবস্থান নিয়েছেন। দেশ ছেড়ে যাতে পালাতে না পারে সেজন্য বিমানবন্দর ও দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে র্যাবের একটি সূত্র জানায়, ‘ওমর ফারুক চৌধুরীকে এখন দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তিনি এখন সাবেক নেতা। তাই তার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কারণ ক্যাসিনোবাণিজ্যে গ্রেপ্তার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি জানিয়েছে। তবে যুবলীগের মতো একটি বড়ো ইউনিটের দায়িত্বে থাকায় এতদিন তাকে আটকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু এখন আসতে পারে।’
মতিঝিলের ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। পরদিন গ্রেপ্তার হন রাজধানীর ধানমণ্ডি কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর নিকেতন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঠিকাদার জি এম শামীমকে। তিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। পরে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। সবশেষ শনিবার রাতে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ড কমিশনার তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় বিদেশি মদ ছাড়াও একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।