কেরানীগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের দেড় মাস পর খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মো. চুন্নু মিয়া।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. চুন্নু মিয়া জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন ছানারঘাট সংলগ্ন চর চামারদহ এলাকায় ট্রলার ডুবিতে মো. রবিন (২২) নামে এক যুবক মারা যায়। এ ঘটনার একদিন পরে রবিনের বাবা মোস্তফা শিকদার একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মামলাটির তদন্তভার আমাকে দিলে আমি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করি। দীর্ঘ ১ মাস মামলার গভীরে ঢুকে গত ৯/১০/১৯ তারিখে তদন্তের প্রাথমিক অবস্থায় ঘটনার সময় উপস্থিত নিহত রবিনের বন্ধু বিপ্লব (৩০) ও মিরাজ (২০) কে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর নিহত রবিন, কামাল (৫০), আদিল, বিপ্লব (৩০), মিরাজ (২০) ও অহিদ ২টি ট্রলার নিয়ে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকায় নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা দেখতে যায়। নৌকা বাইচ দেখে ফিরে আশার সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পথিমধ্যে তারা রবিনকে হত্যা করে।
গ্রেপ্তারকৃত বিপ্লব ও মিরাজ আরো জানায়, কামালের মেয়ের সঙ্গে রবিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল যা কামালের পছন্দ ছিল না। কয়েকবার নিষেধ করেও রবিনকে মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থেকে দূরে রাখতে পারেননি কামাল। এ জন্য কামালের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এবং তাকে মারার পরিকল্পনা করে। গত ৬ অক্টোবর পরিকল্পনা অনুযায়ী নৌকা বাইচ দেখে ফিরে আসার সময় রবিনকে তারা ৪ জন মিলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং ট্রলার নোঙর করার লোহার রড দিয়ে রবিনের বুকে আঘাত করে হত্যা করে। ট্রলার ডুবে রবিন মারা গেছে বলে সবাইকে জানায়।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, রবিন হত্যায় বিপ্লব ও মিরাজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে, তাদের দুজনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মূল আসামি কামালকে গ্রেপ্তার করে তিন দিনের রিমান্ড আনা হয়েছে। বাকি দুই আসামি আদিল ও ওহিদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।